দেশবাংলা

উন্নত এক শহরে পরিণত হচ্ছে পটুয়াখালী

দেশের দক্ষিণের জনপথ পটুয়াখালী শহর এবং সংলগ্ন এলাকাগুলোতে সরকারের নানমুখী উদ্যোগের ফলে চলছে নানামুখী উন্নয়নের মহড়া।

সরকারের এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে জেলা শহরটি এখন অনেকটাই ব্যস্ততম একটি শহরে পরিণত হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা শহরের সাথে এর আশপাশের ইউনিয়নগুলোকে আরও কাছাকাছি সংযুক্ত করতে বেশ কিছু আধুনিক এবং দৃষ্টিনন্দন ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)।

ইতোমধ্যেই চলমান ও গৃহীত একাধিক টুইন সড়ক, নান্দনিক লেক এবং ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে গ্রাম হবে শহর, আর স্বাভাবিক প্রবাহে ফিরবে শহরের ঐতিহ্যবাহী খালগুলো। শোভাবর্ধন হবে শহরের প্রত্যস্ত এলাকার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকার মানুষের মেলবন্ধনের মধ্য দিয়ে।

পটুয়াখালী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস ছত্তার জানান, পটুয়াখালী সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নকে জেলা সদরের সাথে সরাসরি সংযুক্ত করার পাশপাশি জেলার ঐতিহ্যবাহী বহালগাছিয়া খালকে আবারও তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সদর উপজেলার পেছনের বাঁধটি অপসারণ করে সেখানে ৮১ মিটার দীর্ঘ একটি দৃষ্টিনন্দন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। একইভাবে বহালগাছিয়া খালের ওপর নির্মিত গরুর বাঁধ অপসারণ করে সেখানেও ৮১ মিটার দীর্ঘ একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে। যা অনেকটা হাতিরঝিলের ব্রীজের আদলে দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের সাথে পটুয়াখালী পৌর শহরকে সংযুক্ত করতে কুড়িরখাল এলাকায় একটি ৪৫ মিটারের ব্রিজ নির্মিত হবে। এর ফলে জেলা শহরের সাথে ছোটবিঘাই, বড়বিঘাই, মরিচবুনিয়া এবং মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের নতুন একটি সংযোগ স্থাপিত হবে। একইভাবে পটুয়াখালী পৌরসভার সাথে কালিকাপুর ইউনিয়নের নতুন সংযোগ স্থাপন এবং ফুলতলা খালটি প্রবাহমান করতে বাঁধ অপসারণ করে সেখানে ৪৫ মিটারের একটি ব্রিজ নির্মাণ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এমন গুরুত্ব বিবেচনা করে মোট ১২টি ব্রিজ নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে টেন্ডার আহ্বান করে যাবতীয় কার্য সম্পাদন করা হচ্ছে।

আব্দুস ছত্তার বলেন, ‘এ সকল ব্রিজ নির্মিত হলে এই অঞ্চলের মানুষের সড়ক যোগাযোগ যেমন সহজ হবে পাশপাশি খালগুলো আবারও তার স্বাভাবিক জীবন প্রবাহ ফিরে পাবে।’

পটুয়াখালী পৌরসভা মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, প্রধানমন্ত্রীর শতবর্ষ পরিকলল্পনাকে বাস্তবে রুপ দিতে গ্রামেও শহরের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা এবং খাল ও জলাধারগুলোকে তার স্বাভাবিক গতিতে ফিরিয়ে আনতেই এই ব্রিজগুলো নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এসব ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে।

তিনি জানান,  পৌর এলাকার আনসার ক্যাম্প হতে বিটাইপ হয়ে উপজেলার বাঁধ সংলগ্ন বহালগাছিয়া পর্যন্ত পরিত্যাক্ত খালের সংযোগকে পুনরুজ্জিবীত করে নান্দনিক খালে রুপান্তরিত করার কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে। মিনি পার্কের ন্যয় খালের দুপাড়ে লাগানো হয়েছে নানা জাতের গাছের চারা, বসানো হবে বেঞ্চ। লেকে চড়ানো হবে প্যাডেল বোর্ড আর লেক সংলগ্ন সড়কগুলোকে করা হবে ওয়াকিং জোন। সার্র্কিট হাউজ মোড় হতে চৌরাস্তা পর্যন্ত নির্মাণ হচ্ছে টুইন সড়ক। ফরেস্ট পুকুর এবং আরামবাগ দিঘি পুনঃখননের মধ্য দিয়ে নির্মাণ হচ্ছে মিনি শিশুপার্ক। শহরের প্রত্যন্ত এলাকার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকার মধ্যে নতুন নতুন সড়ক নির্মাণের ফলে মেলবন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে বসতিরা।

পটুয়াখালী জেলা জুড়ে উন্নয়নের মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম পায়রা সমুদ্র বন্দর, একাধিক পায়রা তাপ বিদুৎ কেন্দ্র, সাব মেরিন ক্যাবল স্টেশন, শেখ হাসিনা সেনানিবাস, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, লেবুখালী ব্রিজ প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 + 13 =

Back to top button