এইচএসসি পরীক্ষা হবে, জেএসসি ও পিএসসি পরীক্ষা অনিশ্চিত
বাংলাদেশে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা (এইচএসসি) প্রতি বছর এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হয়৷ তবে, এবার করোনার কারণে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা এখনও অনুষ্ঠিত হয়নি৷ এইচএসসি পরীক্ষা কবে হবে তা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি মন্ত্রণালয়৷ তবে পরীক্ষা যে হবে তা নিশ্চিত৷
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা (পিএসসি) না নেয়ার পক্ষে মতামত পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে৷ জেএসসি পরীক্ষার ব্যাপারেও একই ধরনের মতামত পাঠানো হচ্ছে৷ একই সাথে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কীভাবে নেয়া হবে সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে৷
এদিকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করোনার কারণে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে৷ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত এখনো না হলেও নানা ধরনের কথা চলছে৷ এই সব বিষয় নিয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে সরকারের নানা পর্যায় থেকে অনুমান নির্ভর কথা বলায় ধোঁয়াশার সৃষ্টি হচ্ছে৷
করোনাভাইরাস হানা দেয়ার আগেই বাংলাদেশে মাধ্যমিক পরীক্ষা (এসএসসি) অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ এর ফলও প্রকাশ হয়েছে৷ কিন্তু এপ্রিলে অনুষ্ঠেয় জেএসসি (জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষা) এবং এইচএসসি পরীক্ষা আটকে গেছে৷
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেপ্টেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার একটি পরিকল্পনা করছে৷ তবে তা এখনো চূড়ান্ত নয়৷ সেটা সম্ভব হলে নভেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা হতে পারে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে৷ তবে সেই সিদ্ধান্তও নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর ৷
গত ১২ আগস্ট মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা এবং পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে মন্ত্রণালয় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েছে৷ সেই সব পরামর্শ নিয়ে কাজ হচ্ছে৷ কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি৷ কোনো পরীক্ষার তারিখও নির্ধারণ হয়নি৷
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন জানান, ‘‘সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আমাদের ডেকে কথা বলেছেন৷ সেখানে মূখ্য সচিব ছিলেন এবং আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তিনজন সচিব ছিলাম৷ সেখানে নেয়া সিদ্ধান্তের আলোকেই আমি পিএসসি পরীক্ষা না নেয়ার পক্ষে আজ (বুধবার) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মতামত পাঠিয়েছি ৷ আর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা না নেয়ার জন্যও মতামত পাঠানো হচ্ছে৷ তবে এইচএসসি পরীক্ষা হবে৷ সেটা দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিভাবে নেয়া যায় তার সারসংক্ষেপ তৈরি হচ্ছে৷”
মো. আকরাম আল হোসেন আরও বলেন, ”এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র বাড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হবে৷ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এ নিয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়া হবে৷ পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে পাবলিক পরীক্ষা না হলেও স্কুলগুলো খোলার পর নিজেরা সমাপনী পরীক্ষা নিতে পারবে৷”
এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা এবং পরীক্ষার নানা তারিখ সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় তা নিয়ে বিভ্রান্তি এবং উদ্বেগের মধ্যে আছেন অভিভাবকেরা৷ তারা ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না আসলে কি সিদ্ধান্ত হচ্ছে৷ এইচএসসি পরীক্ষার্থীরাও এ নিয়ে মানসিক চাপের মধ্যে আছে৷
অভিভাবকদের অনেকেই বলছেন, এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও তারা সন্তানদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে পাঠাবেন না৷
অভিভাবক ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, ‘‘করোনার সংক্রমণ এখনও কমেনি৷ তাই কোনোভাবেই আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন খোলার পক্ষে নই৷ বিশেষ করে যারা শিশু তারা তো সামাজিক দূরত্বই বোঝে না৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি৷’’
সূত্রঃ ডয়চে ভেলে