এএসপি আনিসুল হত্যায় দুজনের স্বীকারোক্তি
রাজধানীর ‘মাইন্ড এইড’ হাসপাতালে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিমকে হত্যার ঘটনায় রিমান্ডে থাকা দুই আসামি আদালতের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ-উর-রহমান তাঁদের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মোহাম্মদ মনির আহমেদ এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আজ আদালতে কিচেন সেফ মাসুদ খান এবং ওয়ার্ড বয় অসীম চন্দ্র পাল স্বীকারোক্তি দিতে সম্মত হওয়ায় তাদের আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ফারুক মোল্লা। এরপর বিচারক জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
জিআরও বলেন, এ ছাড়া আজ দুপুরে এ মামলায় মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক ফাতেমা খাতুনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে মামলায় মাইন্ড এইড হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন শেফ মো. মাসুদ খান, ওয়ার্ড বয় জোবায়ের হোসেন, ফার্মাসিস্ট মো. তানভীর হাসান, ওয়ার্ড বয় মো. তানিম মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, মো. লিটন আহাম্মদ ও মো. সাইফুল ইসলাম পলাশকে সাত দিন করে রিমান্ডে পাঠায় সিএমএম আদালত। এর মধ্যে দুই আসামি স্বীকারোক্তি দিলেন। বাকি আসামিরা এখনো রিমান্ডে।
আনিসুল করিম ৩১তম বিসিএসের পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ওই বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারের মেধাতালিকায় দ্বিতীয় ছিলেন। প্রথমজন ফাউন্ডেশন কোর্স না করায় তাঁকেই ব্যাচের প্রথম হিসেবে ধরা হতো। তবে পুলিশের এই কর্মকর্তা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এ জন্য তাঁকে মানসিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
পুলিশের উদ্ধার করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, গত ৯ নভেম্বর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে টানাহেঁচড়া করে একটি কক্ষে ঢোকানো হয়। তাঁকে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী মিলে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। কেউ কেউ তাঁর পা চেপে ধরেন। এ সময় মাথার দিকে থাকা দুজন কর্মচারী হাতের কনুই দিয়ে তাঁকে আঘাত করেন।
ভিডিওতে আরো দেখা যায়, চার মিনিট পর আনিসুলকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই তাঁর শরীর নিস্তেজ ছিল। একজন কর্মচারী তখন তাঁর মুখে পানি ছিটান। কিন্তু তাতে আনিসুল করিমের সাড়া মেলেনি। এর সাত মিনিট পর সাদা অ্যাপ্রোন পরা একজন নারী কক্ষে প্রবেশ করেন। ১১ মিনিটের মাথায় কক্ষের দরজা লাগিয়ে দেওয়া হয়। ১৩ মিনিটের মাথায় তাঁর বুকে পাম্প করেন সাদা অ্যাপ্রোন পরা নারী।