এক হাত নেই, আরেকটি অকেজো; পা দিয়ে লিখেই আলিম পাস!
এক হাত ছাড়াই জন্ম, আরেকটি থেকেও যেন নেই। কেননা সেই হাতটিও অন্যসব স্বাভাবিক মানুষের হাতের মতো নয়, তাই তো পা-ই ভরসা তার। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও একদমই দমে যাওয়ার পাত্রী তিনি নন। সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে চান জীবন-স্বপ্নের বাস্তবায়ন। তাই তো থেমে থাকেননি নিলা। চালিয়ে গেছেন পড়ালেখা। আর সে ধারাবাহিকতায় পা দিয়ে লিখেই এবারের উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছেন তিনি।
দৈনিক শিক্ষাসূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার বরধুল গ্রামের ওসমান গণির মেয়ে নিলা খাতুন। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কামারখন্দ ফাজিল মাদরাসা থেকে এবার আলিম পরীক্ষায় অংশ নিয়ে নিলা পেয়েছেন জিপিএ ৩ দশমিক ৮৬।
মাদরাসার কোরআন-হাদিস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাওলানা আনিছুর রহমান বলেন, মেয়েটির একটি হাত নেই, আরেকটিও অকেজো। তারপরও শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সে আলিম পাস করেছে। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের বরধুল মাদরাসা থেকে দাখিল পাস করে সে।
নিলার বাবা ওসমান গণি জানান, ফল দেখে অনেক আনন্দিত হলেও দুশ্চিন্তাও রয়েছে। কৃষি কাজ করে দুই ছেলেকে মাস্টার্স পাস করিয়েছেন। তারা এখনও বেকার। ছোট ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। নিলার লেখাপড়া কতদূর চালিয়ে নিতে পারবেন আল্লাহ জানেন।
নিলা সাংবাদিকদের বলেন, পরিবার ও দেশের বোঝা হয়ে থাকতে চাই না। মানুষের সেবা করতে চাই। পাস করায় তিনি শিক্ষক, বাবা-মা, সহপাঠী সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে সরকারি চাকরি করে দেশের সেবা করতে চাই। সরকারের কাছে আমার পড়াশোনা ও সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা কামনা করছি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, নিলার অবেদন পেলে বিষয়টি দেখা হবে।