করোনাভাইরাসঃ বস্তু বা তল স্পর্শ করাটা রোগটি ছড়িয়ে পড়ার ‘উল্লেখযোগ্য কারণ নয়’
কোনো বস্তু থেকে করোনাভাইরাস সহজে ছড়ায় না বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা (সিডিসি)। মূলত মানুষ থেকে মানুষেই রোগটি ছড়াচ্ছে বলে জানায় তারা।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিডিসি তাদের ওয়েবসাইটে ‘কীভাবে কোভিড-১৯ ছড়ায়’ এ সম্পর্কিত নির্দেশনা এ মাসে হালনাগাদ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ভাইরাসটি একজন মানুষ থেকে আরেকজন মানুষে সহজেই ছড়াতে পারে।
কোন উৎসগুলো রোগটি ছড়ানোর ‘মূল ঝুঁকি নয়’ তা স্পষ্ট করা হয়েছে নির্দেশনায়। সিডিসি এখন বলছে, ভাইরাসের উপস্থিতি আছে এমন বস্তু বা তল স্পর্শ করাটা রোগটি ছড়িয়ে পড়ার ‘উল্লেখযোগ্য কারণ নয়’।
সিডিসির একজন মুখপাত্র ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘যাচাইবাছাই ও পরীক্ষার পর তারা করোনাভাইরাস ছড়ানোর প্রক্রিয়া নিয়ে নির্দেশনাগুলো হালনাগাদ করেছেন।’
ওয়েবসাইটে এখন বলা হয়েছে, ভাইরাসের উপস্থিতি আছে এমন পৃষ্ঠতল বা বস্তু স্পর্শ করার পর কেউ নিজের মুখ, নাক ও হয়তো চোখ স্পর্শ করলে আক্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু এগুলো ‘ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার মূল কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে না।’
বার্তাসংস্থা রয়টার্স ওয়েবসাইটের তথ্য হালনাগাদ করা নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টকে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সংক্রমণ বিষয়ে আমাদের বক্তব্যে পরিবর্তন আসেনি। আমরা বলতে চেয়েছি, কোভিড-১৯ প্রধানত মানুষের সাথে মানুষের ঘনিষ্ঠ সাহচর্য থেকে ছড়ায়।’
কথা বলার সময় অথবা হাঁচিকাশির সময় মুখ থেকে বের হওয়া অতিক্ষুদ্র জলকণার মাধ্যমে বাতাসে ভেসে কিছু দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে ভাইরাস।
কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার কোনো উপসর্গ না থাকলেও ওই জলকণার মধ্যেমে ভাইরাসটি আরেকজনকে সংক্রমিত করতে পারে যদি তাদের মধ্যে দূরত্ব ৬ ফুটের কম থাকে।
স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র, জেলখানা, জাহাজ এবং মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় অনেক মানুষ কাছাকাছি দূরত্বে থাকেন বলে এসব জায়গায় সহজেই এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তবে কোনো রকম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আর ব্যাখ্যা ছাড়াই সিডিসির ওয়েবসাইটের নির্দেশনা হালনাগাদ করা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি মেইলম্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের ভাইরোলজিস্ট অ্যানজেলা এল রাসমুসেন। তার মতে, এর ফলে কোনো কিছু হাতে স্পর্শ করার স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
রাসমুসেন জানান, সিডিসির নির্দেশনায় যাই থাকুক, তিনি কোনো বস্তু স্পর্শ করার ক্ষেত্রে বর্তমান অভ্যাসগুলো বদলাবেন না।
তিনি বলেন, ‘আমি কোনো প্যাকেট ধরার পর হাত ধুয়ে নিই এবং জীবাণুনাশক দিয়ে প্যাকেটের উপরটা মুছে ফেলি। আমার মতে, ঝুঁকি কমানোর জন্য এগুলো করা দরকার।’
যদি কেউ কোয়ারেন্টিনে থাকতে এবং চিঠির খাম অথবা প্লাস্টিকের প্যাকেট জীবাণুনাশক দিয়ে মুছে স্বস্তিবোধ করেন, তাতে ক্ষতির কিছু নেই বলেই মনে করছেন রাসমুসেন।’ তবে কেউ যেন জীবাণুনাশক দিয়ে খাবার মোছার চেষ্টা না করেন, সে বিষয়ে তিনি সতর্ক করেছেন।