Lead Newsকরোনাভাইরাস

করোনাভাইরাস চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনা, সাশ্রয়ী ভেন্টিলেটর হচ্ছে ভারতে!

বিশ্বজুড়ে কভিড-১৯ তথা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার ভেন্টিলেটর। এটি মারাত্মকভাবে সংক্রামিত রোগীদের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সাহায্য করে। ভেন্টিলেটর ছাড়া গুরুতর করোনা রোগীদের প্রাণ বাঁচানো প্রায় অসম্ভব।

করোনা রোগীর সংখ্যা হুহু করে বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালগুলিতে ভেন্টিলেটর সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক হাসপাতালে ভেন্টিলেটরের অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে আক্রান্তদের জন্য এবার ভারতেই যাতে খুব কম খরচে ভেন্টিলেটর বানানো যায়, সে জন্য দেশীয় প্রযুক্তি সরবরাহ করবে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (আইআইএসসি)।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আইআইএসসি-র পক্ষ থেকে একথা জানানো হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, এপ্রিলের শেষের দিকেই সেই দেশীয় প্রযুক্তি তুলে দেওয়া হবে ‘ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যাল্স লিমিটেড (ভেল)’-সহ কয়েকটি দেশীয় প্রস্তুতকারক সংস্থার হাতে।

কভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এই ভাইরাস তাদের ফুসফুসকে পুরোপুরি নষ্ট করে দেয়। ফলে, আক্রান্ত হওয়ার পরেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় রোগীদের। যা তাদের মৃত্যুর কারণও হয়ে ওঠে। কৃত্রিম ভাবে শ্বাসপ্রক্রিয়া চালু রেখে চিকিৎসার জন্য বাড়তি সময় আদায় করার লক্ষ্যেই ব্যবহার করা হয় ভেন্টিলেটর।

এত দিন ভেন্টিলেটর বানানোর জন্য তার মূল দু’টি উপাদান ‘সেন্সর’ এবং ‘ফ্লো-কন্ট্রোলার’ ভারতের প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে আনতে হত বিদেশ থেকে। তার জন্য ভারতে ভেন্টিলেটর বানানোর খরচ বেশি হত। দামও পড়তো অনেক বেশি। এখন বিশ্বজুড়ে লকডাউন চলায় ভেন্টিলেটর বানানোর জন্য বিদেশ থেকে সেন্সর এবং ফ্লো-কন্ট্রোলারও আনা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ে ভারতে এখন ভেন্টিলেটরের সংখ্যা সাকুল্যে ৪৮ হাজার। করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে যা কিছুই নয়।

আইআইএসসি-র ইলেকট্রনিক সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রিন্সিপাল রিসার্চ সায়েন্টিস্ট টি ভি প্রভাকর বলেছেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আমাদের এই প্রযুক্তিতে বানানো সেন্সর এবং ফ্লো-কন্ট্রোলার দিয়ে অনেক কম খরচে ভেন্টিলেটর বানাতে পারবেন দেশীয় প্রস্তুতকারকরা। কারণ, আমরা যে প্রযুক্তিতে ভেন্টিলেটরের এই উপাদানগুলি বানাচ্ছি, তার খরচ সামান্য। আর তা আন্তর্জাতিক ভাবেও স্বীকৃত।’

ভেন্টিলেটরের মধ্যে মূলত থাকে সেন্সর ও অ্যাকচুয়েটর। রোগীদের দেওয়ার আগে চিকিৎসকেরা এদের মাধ্যমেই বায়ু ও অক্সিজেনের চাপ এবং আয়তন মেপে নেন।

আইআইএসসি-র গবেষকরা ওয়াটার পিউরিফায়ারের সেডিমেন্টেশন ট্যাঙ্ককেই একটু অন্য ভাবে ব্যবহার করেছেন ভেন্টিলেটরে বায়ু ও অক্সিজেনকে মজুত রাখা এবং তাদের চাপ ও আয়তনকে কাঙ্খিত মাত্রায় রাখার জন্য। আর গাড়ির চাকায় আমরা হাওয়া ভরি যে ভাবে, সেই পদ্ধতিতেই ভেন্টিলেটরের সেন্সর বানানোর পথ দেখিয়েছেন তারা। (সূত্র- আনন্দবাজার)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 2 =

Back to top button