Lead Newsকরোনাভাইরাসজাতীয়

করোনার সর্বশেষ দৈনিক বুলেটিনে ৮দিন আগের তথ্য!

স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সম্পর্কিত নিয়মিত বুলেটিনে গতকাল রবিবার জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাদের একজনকে কিশোর ও তার বাড়ি রংপুরে।

এই তথ্যটি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিভ্রান্তির। আইইডিসিআর আসলেই সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার তথ্য আপডেট করছে কিনা স্থানীয় প্রশাসন ও জনমনে দেখা দিয়েছে সে প্রশ্নও।

বুলেটিনের ভিডিও কনফারেন্সে তথ্য প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি জানান, মৃত্যুবরণকারী দুই জনই ঢাকার বাইরের। এরমধ্যে একজন কিশোর; বয়স ১১ থেকে ২০-এর মধ্যে। তার বাড়ি রংপুরে। আরেকজনের বয়স ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে। তিনি নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা।

খবরটি রংপুরের জনগণ শোনার পরই এ বিষয়ে সবার কৌতূহল তৈরি হয়। কারণ, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যুর তথ্য সাধারণ মানুষসহ গণমাধ্যমকর্মীদেরও ছিল অজানা। জেলার অনেক সচেতন বাসিন্দা গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ফোন করে নতুন করে কে মারা গেছেন সে তথ্য জানতে চান।

সাংবাদিকদেরও বিষয়টি অজানা থাকায় ভিডিও কনফারেন্সে শোনা তথ্যটির সত্যতা যাচাই করতে যোগাযোগ করা হয় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, কলেজের অধ্যক্ষ সিভিল সার্জনসহ অনেকের সঙ্গে। তারা অবাক হয়ে জানান, এ বিষয়ে তারা অবহিত নন। ফলে স্বাস্থ্য অধিদফতর এ তথ্য কোথায় পেলো তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে চলছে নানান আলোচনা।

সার্বিক বিষয়ে জানতে রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘রংপুরে করোনায় আক্রান্ত কেউ গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে বলে তার জানা নেই।’

যোগাযোগ করা হলে রংপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও পিসিআর ল্যাবের প্রধান অধ্যাপক ডা. নুরন্নবী লাইজুও বলেন, ‘রংপুরে করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কোনও রোগী মারা গেছে বলে আমার জানা নেই।’

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ড. ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত কোনও রোগী মারা যাওয়ার খবর নেই। একটি কিশোর মারা গেছে, তাও বেশ কয়েকদিন আগে।’

পরে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. আমিন আহম্মেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গত ২৫ এপ্রিল গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় রিয়াদ নামে এক কিশোর অসুস্থ অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয় ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। তখনও তার শরীরে করোনা শনাক্ত হয়নি। তারপরেও নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়েছিল। দু’দিন পর নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনে তাকে কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত করা হয়। ওইদিন তার মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দাফন করে তার স্বজনরা।

স্বাস্থ্য অধিদফতর তার বুলেটিনে ২৪ ঘণ্টা পর পর যেহেতু আপডেট তথ্য প্রকাশ করে সেক্ষেত্রে এই কিশোরকে করোনা পজিটিভ হিসেবে ঘোষণা করে তথ্য প্রকাশ করার কথা ছিল গত ২৭ বা ২৮ এপ্রিল। কিন্তু, কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে তার মৃত্যুর তথ্য দেখানো হয়েছে কিশোরটি মারা যাওয়ার ৮ দিন পর। এতদিন পর কেন তাকে গত ২৪ ঘণ্টার তথ্যে মৃত হিসেবে দেখানো হলো তার কোনও উত্তর দিতে পারেননি রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. আমিন আহম্মেদ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, ওই কিশোর ২৫ এপ্রিল মারা গেলেও তার নমুনা সংগ্রহের পর সেটা টেস্ট করা হয়েছে। সেই টেস্টের রেজাল্ট আমরা যখন পেয়েছি তখন সেটা আপডেট করেছি।

খবরঃ বাংলা ট্রিবিউন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 2 =

Back to top button