Lead Newsকরোনাভাইরাস

করোনা আক্রান্ত রোগীর রক্ত থেকে ওষুধ

এবার করোনা আক্রান্ত রোগী থেকেই খোঁজা হচ্ছে রোগ প্রতিরোধক। বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা করতে ওষুধ আবিষ্কারের খুব কাছাকাছি রয়েছেন। করোনা থেকে আরোগ্য হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের দেহ থেকে রক্ত নিয়ে তারা ওষুধ আবিষ্কার করার চেষ্টা করছেন। জাপানের একটি ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান করোনা থেকে বেঁচে গেছেন এমন ব্যক্তির দেহ থেকে ‘ইমিউন সিস্টেম’ পৃথক করে ওষুধ আবিষ্কার করতে চেষ্টা করছেন। তারা এই রোগটির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে এমন প্রোটিন বা অ্যান্টিবডি করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দিচ্ছেন। অসুস্থ ব্যক্তির ওই অ্যান্টিবডি প্রবেশ করিয়ে দিলেই তা কাজ করছে করোনার বিরুদ্ধে এবং তাদের দেহেও একই রকম ভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হলে তারা সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।

ইবোলায় আক্রান্তদেরও এভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল। তবে ইবোলার সময় একের অধিক সুস্থ রোগীর দেহ থেকে অ্যান্টিবডি সংগ্রহ করতে হয়েছিল। ফলে তা সর্বত্র ইবোলা প্রতিরোধে ব্যবহার করা যায়নি। চীনা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করছেন করোনায় আক্রান্তদের সুস্থ করে তুলতে। তারা কেবল তাদের হাসপাতালের সুস্থ রোগীর দেহ থেকেই অ্যান্টিবডি নিয়ে অন্য অসুস্থ রোগীর দেহে প্রবেশ করিয়ে দিচ্ছেন। চীনা চিকিৎসকেরা সর্বত্র ব্যবহারের জন্য ওষুধ আবিষ্কার করেননি।

আমেরিকান স্বাস্থ্যসংক্রান্ত নিউজ এজেন্সি ‘স্ট্যাট নিউজ’র খবর অনুযায়ী জাপানের তাকেদা ফার্মাসিউটক্যাল কোম্পানি ‘ইমিউন সিস্টেম থেরাপি’ উন্নয়নে কাজ করছে। এটাকে ‘প্লাজমা উদগত থেরাপি’ নাম দেয়া হয়েছে। প্লাজমা হলো রক্তের তরল। এটা কোষ, পুষ্টিকণা এবং হরমোন বহন করে ব্লাড ভেসেলের মাধ্যমে এবং এটা পুরো রক্তের অর্ধেক। প্লাজমা রক্তের অ্যান্টিবডিও বহন করে। এই অ্যান্টিবডি রক্তের মধ্যে সংক্রমণ সৃষ্টিকারী প্রবাহমান ভাইরাস ও ব্যাকটিরিয়াকে ধ্বংস করতে পারে নিজে থেকেই। উল্লেখ্য, কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হলে তার দেহে এই ভাররাস ধ্বংসকারী বা প্রতিরোধকারী অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না।

যুক্তরাষ্ট্রের মিনোসোটার মায়োক্লিনিকের ড. গ্রেগ পোল্যান্ড বলেন, এটা অবশ্যই খুবই গুরুত্বপুর্ণ প্রচেষ্টা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই প্রচেষ্টাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করেছে। তাকেদা ফার্মাসিউটিক্যালসের অ্যান্টিবডি উন্নয়নকারী এর নাম ‘টিএকে-৮৮৮’ অভিহিত করবেন বলে জানিয়েছে স্ট্যাট নিউজ। তাকেদা ফার্মার মুখপাত্র জুলি কিম স্ট্যাট নিউজকে বলেছেন, ‘এই থ্যারাপিটিকে আমরা সবার জন্য করতে যাচ্ছি না। কেবল যারা খুবই মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের জন্যই করা হচ্ছে। এই থ্যারাপিটি কবে নাগাদ বাজারে ছাড়া হবে এ ব্যাপারে পরিষ্কার করা না হলেও আশা করা হচ্ছে যে এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি ক্লিনিকেল পরীক্ষায় যাবে না কোম্পানিটি।

আরেকটি কোম্পানি ‘রিজেনেরন’ এ ধরনের থেরাপি আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। গত ফেব্রুয়ারিতে চীনা সরকার করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে এমন লোকদের প্লাজমা দান করার আহবান জানায়। উহানের একটি হাসপাতালে কমপক্ষে ১১ জন রোগী ফেব্রুয়ারির ১৭-এর মধ্যে এ ধরনের প্লাজমা ইনজেকশন গ্রহণ করেছেন। চীনার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সা ইয়ানরং বলেছেন, এদের মধ্যে একজন রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন, একজন বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়েছেন এবং হাঁটাহাঁটি করছেন এবং অন্যরা সুস্থ হওয়ার পথে। নয়া দিগন্ত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × two =

Back to top button