করোনা চিকিৎসায় ‘রেমডেসিভির’ প্রয়োগে আশা জাগানিয়া ফল
পরীক্ষামূলকভাবে করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) এর বিরুদ্ধে একটি ওষুধের প্রয়োগে আশা জাগানিয়া ফল পাওয়া গেছে। প্রচলিত এন্টিভাইরাস ‘রেমডেসিভির’ নামের ওই ওষুধ গ্রহণের পর করোনায় আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীই দ্রুত সেরে উঠছে বলে জানা গেছে। এমনকি এক সপ্তাহের আগেই হাসপাতালও ছাড়তে পারছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্রে কভিড-১৯-এ আক্রান্ত বেশ কয়েকজনের ওপর ওষুধটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কাথলিন মুলেন। রেমডেসিভির সম্পর্কে ওই চিকিৎসকের একটি ভিডিও কনফারেন্স সম্প্রতি হাতে পায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘স্ট্যাট নিউজ’।
ওই ভিডিও কনফারেন্সে ডা. কাথলিন মুলেন বলেন, ‘সবচেয়ে আশার খবর হলো, রেমডেসিভির প্রয়োগের ফলে আমাদের অধিকাংশ রোগী এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে। আমাদের এখানে মাত্র দুজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।’
প্রাণঘাতী ইবোলার চিকিৎসার জন্য ওষুধটি বানিয়েছিল মার্কিন কম্পানি ‘জিলিয়েড সায়েন্সেস’। কিন্তু ইবোলায় ওষুধটির খুব একটা কার্যকারিতা পাওয়া যায়নি। তবে সার্স ও মার্সের চিকিৎসায় ওষুধটি এরই মধ্যে বেশ ফলপ্রসূ প্রমাণিত হয়েছে। এখন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ওষুধটি পরীক্ষামূলকভাবে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে প্রয়োগ করা হচ্ছে। গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকেও বলা হয়, নভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রেমডেসিভির ‘বেশ সম্ভাবনাময়’।
এ বিষয়ে ডা. মুলেনের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এখনো পরীক্ষামূলক প্রয়োগের আনুষ্ঠানিক ফলাফল হাতে পায়নি। আনুষ্ঠানিক ফলাফল হাতে পাওয়ার পর সেগুলো সমন্বয় করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। আর তখনই ওষুধটির কার্যকারিতা সম্পর্কে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে।
ডা. মুলেনের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জানা যায়, রেমডেসিভির প্রয়োগের ফলে যেসব রোগী সেরে উঠেছেন, ৎাদের তীব্র শ্বাসকষ্ট এবং শরীরে প্রচণ্ড জ্বর ছিল। কিন্তু ওষুধটি প্রয়োগের পর গড়ে ছয় দিনের মাথায় অধিকাংশ রোগী সেরে উঠেছেন।
ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের আরো কয়েকটি হাসপাতালে করোনায় আক্রান্তদের ওপর পরীক্ষামূলকভাবে রেমডেসিভির প্রয়োগ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তিন শতাধিক হাসপাতালে চার হাজার রোগীর ওপর ওষুধটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করছে জিলিয়েড সায়েন্সেস। এদের মধ্যে দুই হাজার ৪০০ জনের উপসর্গ তীব্র, বাকি এক হাজার ৬০০ জনের রয়েছে মাঝারি ধরনের উপসর্গ।
জিলিয়েড সায়েন্সেস জানিয়েছে, এই মাসের শেষ দিকে তারা পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফল হাতে পাবে। কম্পানির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছার আগে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফল অবশ্যই বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। কিছু আশা জাগানিয়া ফল পাওয়া গেছে বটে, কিন্তু এসব বিক্ষিপ্ত ফলাফল ধরে ওষুধটিকে কার্যকর কিংবা নিরাপদ ঘোষণা করা যাবে না।’ সূত্র: কালের কণ্ঠ/সিএনএন।