Lead Newsকরোনাভাইরাসতথ্যপ্রযুক্তি

করোনা মোকাবিলায় নতুন পথ দেখাল সুপার কম্পিউটার

করোনাভাইরাস বিজ্ঞানীদের জন্য এক অভাবনীয় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। ভাইরাসটি দ্রুতগতিতে সংক্রমণের সক্ষমতা পুরো বিশ্বকে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়েছে।

সংক্রমণ রোধে হাত ধোঁয়া, মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ নানা পদক্ষেপ অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই এর কোনো টিকা আবিষ্কারের সম্ভাবনা নেই।

এর মধ্যে আশা জোগালো বিশ্বের দ্রুততম সুপার কম্পিউটার। শুক্রবার সিএনএনের এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণ রোধে সক্ষম এমন ৭৭টি রাসায়নিক পদার্থ চিহ্নিত করেছে সুপার কম্পিউটারটি। কম্পিউটার হার্ডওয়্যার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আইবিএম’র আইবিএম সুপার কম্পিউটার সামিট। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন একটি কম্পিউটার। এই বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে হাজার হাজার ওষুধ বিশ্লেষণ করে এসব পদার্থ শনাক্ত করেছে কম্পিউটারটি।

টিকা তৈরির পথে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ওক ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির গবেষকরা ক্যামআরভিক্স সাময়িকীতে সুপার কম্পিউটারের এই আবিষ্কারের কথা প্রকাশ করেছেন। সামিট তৈরি করার মূল লক্ষ্যই ছিল বিশ্বের জটিল সমস্যার সমাধান করা। ২০১৪ সালে মার্কিন জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল।

সিএনএন জানায়, সামিটে রয়েছে ২০০ পেটাফ্লপস। যার মানে, এটি প্রতি সেকেন্ডে ২০০ কোয়াড্রিলিয়ন হিসাব সম্পন্ন করতে পারে। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ল্যাপটপের তুলনায় এটি ১০ লাখ গুণ বেশি দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে পারে। বর্তমানে সামিট রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের টেনিসি অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে। করোনাভাইরাস মানুষের দেহের কোষগুলোকে জেনেটিক পদার্থ দিয়ে তৈরি ‘স্পাইক’ দিয়ে আক্রমণ করে আক্রান্ত করে।

সামিটের কাজ ছিল ওই স্পাইককে আটকে দিতে সক্ষম এমন পদার্থ খুঁজে বের করা। যাতে ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধ করা যায়।

জানুয়ারিতে চীনা বিজ্ঞানীরা ভাইরাসটির জিনোম ক্রম প্রকাশ করে। ওই গবেষণার ওপর ভিত্তি করে ওক রিজ ল্যাবরেটরির গবেষক মাইকোলাস স্মিথ ভাইরাসটির স্পাইকের একটি নমুনা তৈরি করেন।

সামিটের সাহায্যে তিনি নানা পরীক্ষা চালিয়ে দেখেন যে, ভাইরাসটি বিভিন্ন পদার্থের ক্ষেত্রে কিরকম প্রতিক্রিয়া দেখায়। এরকম ৮০০০ পদার্থের সিমুলেশন চালায় সামিট। সেখান থেকে ৭৭টি পদার্থকে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে সক্ষম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ওক রিজের গবেষণা দলটি জানিয়েছে, তারা সামিটের সাহায্যে আরো নিখুঁত মডেল দিয়ে ফের পরীক্ষা চালাবে। কেবল রাসায়নিক পদার্থ চিহ্নিত করাই ভাইরাসটির সংক্রমণ থামাতে সক্ষম নয়।

পরবর্তী পদক্ষেপ হচ্ছে পরীক্ষামূলক গবেষণা চালিয়ে সবচেয়ে কার্যকরী পদার্থগুলো খুঁজে বের করা। ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি সেন্টার ফর মলিউকুলার বায়োফিজিক্সের পরিচালক জেরেমি স্মিথ জানান, আমরা করোনাভাইরাসের কোনো টিকা বা চিকিৎসা পাইনি। তবে এই তথ্যগুলো ভবিষ্যৎ গবেষণায় কাজে লাগবে। টিকা তৈরির পথে এ তথ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − 1 =

Back to top button