কাগজমুক্ত হাইকোর্ট-বেঞ্চ, বিচারপতি বললেন ‘নতুন যুগ’
অবশেষে কাগজমুক্ত বিচারকাজ শুরু হয়েছে হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চে। বহুলপ্রতীক্ষিত কাগজমুক্ত বিচারকাজ শুরু হওয়ায় সংশ্লিষ্ট বিচারপতি বিষয়টিকে নতুন যুগে প্রবেশ বলে মন্তব্য করেছেন।
বিচারপতি আহমেদ সোহেলের একক কোম্পানি বেঞ্চে ৫ জানুয়ারি রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম এধরনের বিচারকাজ শুরু হলো।
এজলাসে বসে বিচারপতি আইনজীবীদের জানান, প্রথমদিন দুটি মামলার আবেদন অনলাইনে জমা পড়েছে। যে দুটি আবেদন জমা পড়েছে তার একটির আইনজীবী হলেন মো. জামিল খান।
তিনি বলেছেন, অনলাইনে একটি ম্যানশন স্লিপ জমা দিয়েছেন তিনি। আরও কয়েকটি আবেদন প্রস্তুত আছে জমা দেওয়ার জন্য।
রোববার এই কোম্পানি কোর্টের কার্যতালিকায় ৩০টি মামলা শুনানির জন্য ছিল। শুনানি করার সময় আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারপতি আহমেদ সোহেল অনলাইনে মামলা ফাইল করার পরামর্শ দেন। এরপর তালিকায় থাকা মামলাগুলোর স্বাভাবিক শুনানি করা হয়। তিনি আইনজীবীদের বলেন, সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে একটি ভিডিও দেওয়া আছে। এতে কীভাবে ফাইল করতে হবে তা বলা হয়েছে। আস্তে আস্তে এতে অভ্যস্ত হয়ে যান।
এসময় করোনার সময় অনলাইনে শুনানির বিষয় স্মরণ করিয়ে বিচারপতি বলেন, প্রথম প্রথম ঝামেলা মনে হলেও পরে আইনজীবীরা এতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন।
এক পর্যায়ে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে আদালতে বলেন, লার্নেড ডিএজি, এখন তো সব অনলাইন, আমরা নতুন যুগে প্রবেশ করলাম।
তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মহসিনা খান লাকি বলেন, তার পরিচিত এক আইনজীবীও অনলাইনে একটি মামলা জমা দিয়েছেন।
মামলা করার ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার বিষয়ে অ্যাডভোকেট মো. জামিল খান বলেন, সংশ্লিষ্ট সেকশন থেকে প্রথমে একটি পাসওয়ার্ড নিতে হবে। এরপর নিজের একটি আইডি খুলতে হবে। কোনো মামলা ফাইল করার সময় আবেদনের অংশটি পিডিএফ করে নিজের আইডি দিয়ে সংশ্লিষ্ট সেকশনে ঢুকে আপলোড করতে হবে। এরপর ওই পাতার প্রিন্ট কপি নিয়ে আবেদনের অন্যান্য কাগজসহ এফিডেভিট করতে হবে। পরে সেই এফিডেভিট করার ফাইল নিয়ে সংশ্লিষ্ট কোর্টে শুনানি করতে হবে। শুনানি এখন এজলাসে হবে। পরে অনলাইনে করার ব্যবস্থা হলে করা যাবে বলেও তিনি বলেন।
গত ৩১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন বছর কাগজমুক্ত বিচারকাজ শুরু করার বিষয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের প্রত্যাশার কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রধান বিচারপতি ঘোষিত রোডম্যাপের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিচারসেবাকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছানোর জন্য বিভিন্নমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের কোম্পানি সংক্রান্ত একটি বেঞ্চে সম্পূর্ণ কাগজমুক্ত বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।