করোনাভাইরাসজাতীয়

কাল থেকে করোনা কিটের নিজস্ব ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র

করোনাভাইরাস শনাক্তে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিজেদের গবেষকদের উদ্ভাবিত ‘জিআর র‌্যাপিড ডট ব্লট’ কিটের নিজস্ব ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করবে সংস্থাটি। সম্পূর্ণ বিনা খরচে তারা এই পরীক্ষা করবে।

গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে আগামীকাল রবিবার (১০ মে) থেকে এটি শুরু হবে। শনিবার (৯ মে) ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, রবিবার থেকে আমরা ইন্টারন্যাল ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করবো।

তিনি বলেন, যেসব বয়স্ক রোগী কোথাও করোনার পরীক্ষা করাতে পারছেন না, অথবা যেসব রোগী করোনার পরীক্ষা করিয়ে একটিতে পজিটিভ রেজাল্ট এসেছে, আরেকটি নেগেটিভ এসেছে, এখন আরেকটি পরীক্ষা কোথাও করাতে না পেরে চিকিৎসা করতে পারছেন না তাদের আমরা পরীক্ষা করবো। এসব রোগীকে আমরা সাহায্য করার জন্য আমাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আওতায় এনে পরীক্ষা করে দেবো। তাতে কোনও খরচ লাগবে না।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের হাসপাতালের নিজস্ব চিকিৎসকরাই এই পরীক্ষা করবে বলে উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ বলেন, আমরা আগেও তো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করেছি, এখন ব্যাপক আকারে করবো। যেহেতু অন্যদিকের কোনও অগ্রগতি হচ্ছে না।

করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করানোর জন্য সারাদেশে মানুষ ভোগান্তির মধ্যে পড়ছে উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, পত্রিকায় নিউজ এসেছে বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে মানুষ পরীক্ষা করতে পারছে না। কেউ কেউ ৭ থেকে ৮টি হাসপাতালে ঘুরেও পরীক্ষা করতে পারছে না। তারা কান্নাকাটি করছে। অনেক রোগীর প্রথম পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের পজিটিভ এসেছিল, তারা চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন তারা সুস্থ বা করোনামুক্ত কিনা তা পরীক্ষা না করাতে পারার কারণে জানতে পারছেন না। অনেক রোগীর ডায়ালাইসিস লাগে কিন্তু করোনা হয়েছে কিনা সেটা না জানায় করতে পারছে না। আমরা তাদের  ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আওতায় এনে সাহায্য করবো।

গণস্বাস্থ্যের করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিট পরীক্ষা নিয়ে বিতর্কের পর ৩০ এপ্রিল ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) বা আইসিডিডিআর,বিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য অনুমিত দেওয়া হয়। এরপর গত ২ মে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শাহীনা তাবাসসুমকে প্রধান করে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

বিএসএমএমইউ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিটের কার্যকারিতা বিষয়ে কী জানিয়েছে জানতে চাইলে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, বিএসএমএমইউ হাসপাতাল থেকে এখনও কোনও কিছু জানায়নি আমাদের। রবিবার এ বিষয়ে আপডেট জানাবে বলছে।

উল্লেখ্য, ২৫ এপ্রিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের কাছে করোনা টেস্টের কিট হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে ওষুধ প্রশাসনের কাছে কিটের ট্রায়াল চালানোর অনুমতির জন্য দেন-দরবার করে আসছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। এক পর্যায়ে দুই পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ শুরু করে। গণস্বাস্থ্য অভিযোগ তোলে ওষুধ প্রশাসন কিটের ট্রায়ালের বিষয়ে সহায়তা করছে না। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। এর  আগে ১৭ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের পরীক্ষার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণায় কিট উৎপাদনের কথা জানায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। পরে ১৯ মার্চ কিট উৎপাদনে যায় প্রতিষ্ঠানটি। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গবেষক ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে  ড. নিহাদ আদনান, ড. মোহাম্মদ রাঈদ জমিরউদ্দিন, ড. ফিরোজ আহমেদ এই কিট তৈরি করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 6 =

Back to top button