কাশ্মীরিদের মনোবল ভাঙতে ধর্ষণকে বেছে নিচ্ছে ভারতীয় সেনারা
ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় অঞ্চলটিতে ইতোমধ্যে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যা নিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে এবার স্থানীয় বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে ধর্ষণকে নিয়ম হিসেবে বেছে নিয়েছে ভারতীয় সেনারা। এমনটাই দাবি করেছে নিউ ইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
বর্তমানে নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধে গোটা বিশ্ব যখন টানা ১৬ দিনের একটি কর্মসূচি পালন করছে, ঠিক তখনই মানবাধিকার সংস্থাটি চাঞ্চল্যকর এই তথ্য প্রকাশ করল।
সংস্থাটির পাঠানো প্রতিবেদনের বরাতে গণমাধ্যম দ্য ডন জানায়, গত সোমবার আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ওই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতি বছর দিনটিকে মূলত নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধের আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এবার ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে গোটা বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রত্যাশা করছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
সম্প্রতি জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদনে আভাস মিলেছে, কাশ্মীরি জনগণের মনোবল ভেঙে দিতে এবার নারীদের নিশানা বানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের নিপীড়ন ও শাসনের বিরুদ্ধে গত কয়েক দশক যাবত লড়াই করে আসছেন কাশ্মীরি অধিবাসীরা। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় সামরিকবাহিনীর হাতে কাশ্মীরি নারীদের ব্যাপক ধর্ষণের অপরাধ নিয়মিতভাবে দায়মুক্তি পেয়ে আসছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ‘বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ ও শান্তির সময়েও ধর্ষণ এবং যৌন সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বন্ধে এখনই সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
সেক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার নারীদের ক্ষমতায়ন ও সবাইকে তাদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসনের এই প্রতিনিধি।
জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা মারিয়া লুইজা রিবেইরো ভিয়োট্টি ভারত সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন বিষয়াদি পর্যালোচনার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, উপত্যকাটির প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে একজন যৌন সহিংসতার শিকার।’
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতীয় সেনা সদস্যদের জন্য ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৯০’ রয়েছে। মূলত সেই আইন অনুযায়ী কীভাবে ভারতীয় সেনাদের এত অস্বাভাবিক ক্ষমতা দেওয়া হলো, প্রতিবেদনটিতে সেই বিষয়টি নিয়েও বিস্তর আলোচনা হয়।