Breakingধর্ম ও জীবন

কুরবানি দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে কী করবেন?

কুরবানি মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের অন্যতম ইবাদত। এ ইবাদতে অংশগ্রহণ করতে চাইলে কুরবানির মাস জিলহজের শুরু থেকেই বেশ কিছু করণীয় ও বর্জনীয় কাজ রয়েছে। অনেকে ইসলামিক স্কলাররা করণীয় কাজগুলোকে ওয়াজিব আর বর্জনীয় কাজগুলোকে হারাম বলেছেন।

কুরবানি করার ইচ্ছাপোষণকারী ব্যক্তির জন্য সুন্নাহ থেকে এ কথাগুলো (করণীয়) প্রমাণিত, যে ব্যক্তি কুরবানি দেওয়ার ইচ্ছা বা সংকল্প করেছে তার জন্য ওয়াজিব হলো- জিলহজ মাস প্রবেশের (শুরু হওয়ার) সঙ্গে সঙ্গে কুরাবানির (দিন) পশু জবেহ না করা পর্যন্ত সে যেন তার দেহের কোনো লোম বা চুল, নখ ও চর্মাদি না কাটে।

হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তোমরা জিলহজ মাসের চাঁদ দেখবে এবং তোমাদের মধ্যে কেউ কুরবানি করার ইচ্ছা করবে, তখন সে যেন কুরবানি না করা পর্যন্ত তার চুল ও নখ (কাটা) হতে বিরত থাকে।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে- ‘সে যেন তার (মরা বা ফাটা) চামড়ার কিছুও স্পর্শ না করে।’ (মুসলিম)

কুরবানি দাতার জন্য জিলকদ (চলতি) মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই এ প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। কারণ আরবি মাসগুলো ২৯ ও ৩০ দিনে হয়। তাই মাসের শেষ দিকে নতুন (জিলহজ) মাস শুরু হওয়ার বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। কারো ক্ষুরকর্ম বাকি থাকলে জিলকদ মাসের শেষ দিকে সম্পন্ন করাই উত্তম।

মনে রাখতে হবে
কুরবানি করার ইচ্ছা আছে তারপরও যদি কেউ জেনে-শুনে ইচ্ছা করেই চুল-নখ কাটে, তবে তার জন্য জরুরি যে, সে যেন আল্লাহর কাছে ইসতেগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করে। তবে তার জন্য কোনো কাফফারা নেই। সে স্বাভাবিকভাবেই কুরবানি করবে।

একান্ত প্রয়োজনে…
কুরবানি করার ইচ্ছাপোষণকারীর নখ, চুল কিংবা চামড়া কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে তা কেটে ফেলায়ও কোনো দোষ নেই।

কুরবানির করার ইচ্ছা ছিল না কিন্তু…
জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার আগে কুরবানি করার ইচ্ছা বা সামর্থ্য ছিল না; ওই অবস্থায় কেউ জিলহজ মাসে চুল-নখ বা চামড়া কেটে ফেলল। তারপর কুরবানি করার ইচ্ছা পোষণ করে; তখন থেকে তারপর থেকে কুরবানির আগ পর্যন্ত তা আর কাটবে না।

অসিয়তকারী ব্যক্তি…
কুরবানি করার জন্য যদি কেউ কাউকে দায়িত্ব দেয় কিংবা অসিয়ত করে তবে ওই দায়িত্ব দেওয়া বা অসিয়ত করা ব্যক্তিও নখ-চুল কাটবে না। অবশ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির জন্য এ করণীয় মেনে চলার প্রয়োজন নেই।

ঠিক এভাবে…
যারা কুরবানি করবেন, তাদের স্ত্রী, পুত্র কিংবা আত্মীয়দের মধ্যে যারা কুরবানি করবে না; তারাও এ নিষেধাজ্ঞায় শামিল হবে না। তাদের চুল-নখ কিংবা চামড়া কাটতে কোনো বাধা নেই। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ বংশধরের তরফ থেকে কুরবানি করতেন অথচ তিনি তাদের নখ-চুল কাটতে নিষেধ করেছেন বলে কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না।

সুতরাং কুরবানি করতে আগ্রহীরা জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার আগেই প্রয়োজনীয় চুল-নখ কেটে পরিচ্ছন্ন হবেন। জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে পশু জবেহ করার পর্যন্ত সুন্নাতের উপর যথাযথ আমল করবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty + 17 =

Back to top button