জাতীয়

কেন আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ?

দাম্পত্য জীবনে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ না থাকা, সহনশীলতার অভাব, মাদকের ব্যবহার এবং যৌতুকের দাবির মুখে চট্টগ্রামে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে।

বছরে দেড় হাজারের বেশি ডিভোর্স আবেদন নিষ্পত্তি হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের পারিবারিক আদালতে। আর প্রতি বছর আবেদন জমা পড়ছে সাড়ে তিন হাজারের বেশি। নানা জটিলতায় করোনাকালেও সেই হার আরও বেড়ে গেছে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৭০টি ডিভোর্স আবেদন জমা পড়ছে।

চট্টগ্রাম আদালত ভবনের পারিবারিক আদালতের সামনের ভিড় ইঙ্গিত দেয় দাম্পত্য জীবনের কলহ কোন মাত্রায় পৌঁছেছে। প্রতিদিনই শুনানি শেষে অভিযোগের নিষ্পত্তি করে কূলিয়ে উঠতে পারছেন না বিচারকরা।

সিটি কর্পোরেশনের তথ্য মতে, প্রতি বছরই ডিভোর্সের আবেদন অন্তত এক হাজার করে বাড়ছে। ২০১৬ সালে ৪ হাজার ১৮২টি আবেদনের বিপরীতে ১ হাজার ৪১৭টি নিষ্পত্তি হয়েছিল। আর চলতি বছরের প্রথম আট মাসে আবেদন জমা পড়েছে ৩ হাজার ৫৫৭টি।
স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট জাহানারা ফেরদৌস বলেন, সহনশীলতা ও শ্রদ্ধাবোধ কমে গেছে। কিছু আধুনিকতা তো রয়েছে।

পারিবারিক বিরোধের পাশাপাশি ডিভোর্সের হার বাড়ার বেশকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন আইনজীবীরা।অতিরিক্ত পি পি অ্যাডভোকেট খোরশেদুল আলম সিকদার বলেন, মামলার যে বিষয়গুলো সেগুলো বিরোধ বেড়ে যাওয়ায় বিচ্ছেদও হচ্ছে বেশি।
মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট জান্নাতুল নাইম বলেন, গত সপ্তাহে ৫টা ডিভোর্স নিয়ন্ত্রণ করেছি। আমি অনেক বুঝিয়ে পাঠিয়েছি, কারণ সন্তান রয়েছে।
এদিকে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে লকডাউনের কারণে গৃহবিবাদ আরও বেড়েছে। বিচ্ছেদের হার বাড়তে থাকায় সমাজে ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার শঙ্কা সমাজ বিজ্ঞানীদের।
সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা ভাঙা পরিবারের কথা বলে থাকি। এতে কোনো শিশু হয় মায়ের ভালোবাসা, না হয় বাবার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
দেনমোহর, যৌতুক এবং খোরপোষের মতো পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য চট্টগ্রাম আদালতে দুটি এবং বিচ্ছেদ সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সিটি কর্পোরেশনে পৃথক দুটি আদালত রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × three =

Back to top button