তথ্যপ্রযুক্তি

ক্যাশলেস সোসাইটি প্রতিষ্ঠা ডিজিটাল বাংলাদেশের পরবর্তী পদক্ষেপ: সজীব ওয়াজেদ জয়

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পরবর্তী পদক্ষেপ ক্যাশলেস সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করা যা সমাজ থেকে দুর্নীতি হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।

তিনি বলেন আওয়ামী লীগ সরকারের স্বপ্ন ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল।

প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা মঙ্গলবার প্রবাস থেকে রেমিট্যান্স প্রেরণের পেমেন্টে নেটওয়ার্ক সার্ভিস ‘ব্লেজ’ এর উদ্বোধন উপলক্ষে ডিজিটাল প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

জয় বলেন, দেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। যাদের অধিকাংশই গ্রামের মানুষ। তাঁদের কাছে নগদ টাকা থাকায় চুরি ও দুর্নীতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু ক্যাশলেস সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করা হলে মানুষের হাতে নগদ টাকা রাখার কোন প্রয়োজন নেই। ফলে চুরি ও দুর্নীতির কোন সম্ভাবনাও নেই।

প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বর্তমানের উপরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ১০ বছর পরে উন্নয়নের কোন স্তরে পৌঁছাবে সেই পরিকল্পনা গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন করে।

এ প্রসঙ্গে তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের উদাহরণ টেনে বলেন সরকার ইউনিয়ন পর্যন্ত অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল লাইন স্থাপন, ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম চালু ,স্বাস্থ্য ক্লিনিকে ভিডিও কনফারেন্সং সিস্টেম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা সহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করায়, করোনা মহামারীকালেও আমরা প্রায় সব কিছু সচল রাখতে পেরেছি। কিন্ত ডিজিটাল সিস্টেম কার্যকর না থাকায় বিশ্বের অনেক ধনী দেশ করোনা কালীন সংকট মোকাবেলায় আমাদের থেকে পিছিয়ে।

ব্লেজ পেমেন্ট নেটওয়ার্ক সার্ভিসের সুবিধার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,প্রচলিত ধারার ব্যাংকিং কার্যক্রমের নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

যেমন সপ্তাহে ৫দিন ব্যাংক খোলা। আবার বিদেশে যখন দিন তখন বাংলাদেশে তখন রাত। এসব সীমাবদ্ধতার কারণে বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতে নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। ব্লেজ পেমেন্ট নেটওয়ার্ক সার্ভিসে এই সীমাবদ্ধতা নেই। যে কোন দিনে যে কোন সময়ে ৫ সেকেন্ডে প্রেরিত টাকা গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ উল্লেখ করে বলেন তিনি সামনে থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলেই আজ আমরা বৈশ্বিক মহামারী করোনা মোকাবেলায় সক্ষম হয়েছি। তাঁর নির্দেশেই পরিচয় গেটওয়, সুরক্ষায় অ্যাপস, সেন্ট্রাল এইডস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, জরুরী সেবা কলসেন্টার ৯৯৯ ও ৩৩৩ চালু হয়েছিল বলেই আমরা করোনা মহামারী সময় মানুষের জীবন রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ,বিনোদন, প্রশাসনিক কাজসহ প্রায় সবকিছু চলমান রাখা সম্ভব হয়েছে।
এছাড়াও অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত ছিল উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন করোনার আগে আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল ১৯০০ মার্কিন ডলার যা ২০২০ সালে ২২২৭ ডলারে উন্নীত হয়।
তিনি বলেন আমরা ক্যাশলেস সোসাইটি প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি । ই-নথি চালু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ২ কোটির অধিক ফাইল নিষ্পত্তি হয়েছে। ভার্চুয়াল কোর্টে ২ লক্ষ ৫০ হাজার জামিন শুনানি হয়েছে। বর্তমানে ১১ হাজার সরকারি দপ্তর পেপারলেস অফিসের সাথে যুক্ত। ২০২১ সালের মধ্যে ইন্টার অপারেল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্লাটফর্ম চালু করা হবে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য,সোনালী ব্যাংক, Homepay ও ITCL এর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত Blaze সার্ভিসের মাধ্যমে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ বিশ্বের যে কোন প্রান্ত হতে সহজ ও নিরাপদে ০৫ সেকেন্ডে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা বাংলাদেশের যে কোন ব্যাংকের যে কোন গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব জমা করা যাবে।

এল আই সি টি প্রকল্পের আইটি ,আইটিইএস প্রকল্পের পলিসি এডভাইজার সামি আহমেদের সঞ্চালনায় ও সোনালী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, সোনালী ব্যাংকের সিইও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ আতাউর রহমান প্রধান, হোমপে এর সিইও রুবেল আহসান, আটিসিএল এর এমডি কাজী সাইফুদ্দিন মুনির।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 17 =

Back to top button