ক্রাইস্টচার্চে হামলা: খুনিকে ক্ষমা ঘোষণা নিহতের মায়ের
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শুনানি পর্বে অংশ নেওয়া এক মা নিজ সন্তানের ঘাতককে ক্ষমা করার ঘোষণা দিয়েছেন।
২৪ আগস্ট ক্রিস্টচার্চ মসজিদ হত্যাকাণ্ড মামলার ঘাতকের শুনানি শুরু হয়। এতে সাক্ষ্যপ্রদান করতে হামলা থেকে রক্ষা পাওয়া ও নিহতদের স্বজনরা অংশ নেয়। মূল রায় ঘোষণার আগে মোট তিনদিন শুনানি চলে।
শুনানিতে ইরাক বংশোদ্ভূত জান্নাত আদনান ইজ্জাত নামের এক নারী অংশ নেয়। নিজ সন্তান হাসান আমারি (২৯)-এর পক্ষে সাক্ষ্যপ্রদান শেষে ক্ষমার ঘোষণা দিয়ে জান্নাত সবাইকে করে অবাক করে দেন। তিনি বলেন, ‘অবশেষে আমি আপনাকে ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ আমার অন্তরে কারো প্রতি ঘৃণাবোধ নেই। এ ছাড়া অন্য কোনো পথ আমার কাছে নেই।’
নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড পত্রিকা মতে, বুলেটের আঘাতে জর্জরিত নিজ সন্তানের মৃতদেহ জান্নাত যেদিন গ্রহণ করেছিলেন, সেদিনটি জান্নাতের জম্মদিন ছিল। তাছাড়া ওই দিনটি মধ্যপ্রাচ্যে ‘মা দিবস ‘ পালিত হয়। জান্নাত বলেন, ‘প্রতি বছর এ দিন আমার ছেলে আমাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাত। কিন্তু সেদিন ফুলের বদলে সন্তানের মৃতদেহ গ্রহণ করেছিলাম।’
শুনানির সময় জান্নাতের পুরো কথা শুনে হত্যাযজ্ঞের ঘাতক অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত ব্রেন্টন টরেন্ট। পত্রিকার বর্ণনা মতে, সন্তানকে হত্যার পরও মায়ের পক্ষ থেকে ক্ষমার ঘোষণা শুনে টরেন্টের দুই চোখ অশ্রুসিক্ত হয়।
শুনানিতে হত্যাকাণ্ড থেকে রক্ষা পাওয়া অনেকে। নিহতদের স্বজন ও রক্ষা পাওয়াদের সাক্ষ্যে ফুটে উঠে দৃঢ়তা ও সাহসিকতার গল্প। যেন হত্যাযজ্ঞ তাঁদের অন্তরে কোনো প্রভাবই ফেলেনি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ব্রেন্টন টারান্ট নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে দুইটি বন্দুক দিয়ে হামলা চালায়। জুমার আগমুহূর্তে প্রথমে নুর মসজিদে আকস্মিক হামলা চালায়। অতঃপর পাঁচ কিলোমিটার দূরের লিনউড মসজিদে হামলা চালায়। ঘাতক ট্রান্টের বিরুদ্ধে ৫১ জনকে হত্যা, ৪০ জনকে হত্যা চেষ্টা এবং সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়।
সূত্র : নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড