সাজাপ্রাপ্ত আসামির বিদেশ যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ মতামত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
রোববার বিকেলে খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেয়ার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর সচিবালয়ে তার নিজ দফতরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত অনুযায়ী তাদের আবেদন মঞ্জুর করতে পারছি না। আইন অনুযায়ী যতটুকু করণীয় ততটুকু করেছি। কিন্তু আইনের বাইরে গিয়ে আমরা কিছু করতে পারি না।
উল্লেখ্য, বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির বাসায় আবেদনটি নিয়ে যান খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। এরপর ওই আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অত্যন্ত অমানবিক :
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি প্রবীণ আইনবিদ খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার কোথাও লেখা নেই যে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে পারবে না। বরং সরকার ইচ্ছা করলে নির্বাহী আদেশে এমন ক্ষমতা দেয়া হয়েছে যে সরকার নির্বাহী আদেশে যেকোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সাজা মওকুফ করতে পারে। শর্তহীনভাবে বা শর্ত দিয়ে যেকোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্তি দিতে পারে। এক্ষেত্রে সরকার যদি শর্ত দিত যে তিনি বিদেশে যাবেন এবং চিকিৎসা শেষে দেশে চলে আসতে হবে। এছাড়া আইনে এমন কোনো বিধান নেই যে কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি চিকিসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন না।
আজ রোববার গণমাধ্যমে দেয়া এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এ অনুরোধ জানান ।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্টে ডিসিশন আছে। দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিদেশে যেতে পারেন। অতীতে সাত বছরের সাজা মামলায় রহমত সাহেবকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অত্যন্ত অমানবিক। এবং সরকারকে এই দায়ভার নেয়া উচিৎ হবে না। কেন না যদি কোনো অঘটন ঘটে তা হলে তার সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে।
খন্দকার মাহবুব হোসেন আরো বলেন, সরকারকে মনে রাখতে হবে, আইনকে শুধু কঠোর না মানবিকভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। ফৌজদারি কার্যবিধি বা দণ্ডবিধিতে বিশেষ কোনো কারণ নেই যে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দেয়াটা সম্পূর্ণ অমানবিক। আমি আবারো বলছি, এর দায় দায়িত্ব সরকারের গ্রহণ করা ঠিক হবে না। যদি চিকিৎসার অভাবে কোনো অঘটন ঘটে তার সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে। জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।