বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘স্লো পয়জন’ দেওয়া হয়েছিল কি না? দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে শেখ হাসিনা উদারচিত্তে মুক্তি দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়ার পাশে থাকেনা। তার পাশে থাকে বিএনপির বিশ্বস্ত নেতাকর্মীরা। তাকে যদি স্লো পয়জন দেওয়া হয়, সেটা শুধু বিএনপির নেতারাই দিয়েছে, যারা তার পাশে থাকে।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলির সভায় এসব কথা বলেন তিনি ।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পছন্দের লোক দিয়েই তার চিকিৎসা করা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে যদি স্লো পয়জন দেওয়া হয় তাহলে তার আশেপাশের লোকেরাই দিয়েছে আর এজন্য হুকুমের আসামি শেখ হাসিনা হবেন না, ফখরুল সাহেব আপনারাই হবেন (বিএনপির নেতাকর্মী)
ওবায়দুল কাদের বলেন, কারো চিকিৎসার নাম করে দেশের জনগণকে জিম্মি করা যাবে না। আন্দোলনের নামে দেশের মধ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে প্রতিহত করা হবে। এজন্য দেশের সকল জনগণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যারাই বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির বাধাগ্রস্ত করবে আমরা তাদেরকে সমুচিত জবাব দেব। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশকে কেউ পিছিয়ে দিতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মী ও সংগঠনকে আধুনিক ও স্মার্টভাবে গড়ে তোলা হবে।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মাস্টারমাইন্ড জিয়াউর রহমান উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ১৫ই আগস্ট জিয়াউর রহমান মাস্টারমাইন্ড না হলে, পৃষ্ঠপোষক না হলে, কখনো কারো সাহস হতোনা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার। বঙ্গবন্ধুকে হত্যারপরে একই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে প্রাইম টার্গেট করে গ্রেনেড হামলা করা হয় এবং তাকে হত্যা করার জন্য একেরপর এক ষড়যন্ত্র করা হয়। সেই হত্যা-সন্ত্রাসের ষড়যন্ত্র থেকে আজও সরে দাঁড়ায়নি বিএনপি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এদেশে ক্ষমতায় আসলে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন হয় তাই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে চায়। দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বাঁচাতে হবে, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে বাঁচাতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হচ্ছে। সংবিধান অনুযায়ী দেশের নিয়মনীতি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছেন। খালেদা জিয়া একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, তারপরেও সাথে তার গৃহপরিচারিকাকে ও দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবাও দেওয়া হয়েছে। হতে পারেন তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী কিন্তু এখন তিনি আইনের চোখে একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তারপরেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে মুক্তি দিয়েছেন এবং জেলে থাকার সময় তাকে সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন। কিন্তু বিএনপি নেতারা প্রধানমন্ত্রীর এই উদারতাকে হিংসা বলতে দ্বিধা বোধ করছেন না। বিএনপির কৃতজ্ঞতা নিয়ে দেশের জনগণের মনে প্রশ্ন আছে? তারা যে এদেশের মধ্যে প্রতিহিংসার জন্ম দিয়েছে তা দেশের জনগণ জানে।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আহম্মদ হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর সবুর, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ অনেকেই