জাতীয়

গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরিচ্যুতি বন্ধ ও বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর

গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরিচ্যুতি বন্ধ ও তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে প্রতিষ্ঠান কর্ণধারদের আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ব্রাকের সহায়তায় ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের নমুনা সংগ্রহ বুথ’ উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “‘করোনা দুর্যোগ পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, কিছু মিডিয়া হাউজে চাকরিচ্যুতি ঘটেছে, অনেকের বেতন দেয়া হয়নি। আমি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইন কর্ণধারদের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাই, মহামারীর এই দুঃসময়ে দয়া করে কাউকে চাকরিচ্যুত করবেন না এবং যাদের বেতন বাকি আছে, তা দিয়ে দিন।”

হাছান মহমুদ বলেন, কারো অপরাধ থাকলেও, শাস্তি দেয়ার সময় এটি নয়। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা হয়তো বলবেন- সমস্যা আছে, কিন্তু আমি বলবো, আগে সমস্যা ছিল না এবং কয়েক মাস পরেও সমস্যা থাকবে না।’

সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা যাতে ঠিকমতো হয়, সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ক্রোড়পত্রের বিল দেয়ার ব্যবস্থা করছি আমরা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, তাদের সংস্থা থেকে গণমাধ্যমের যত বিল বাকি আছে, সেগুলো পরিশোধের জন্য। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকেও একটি তাগিদপত্র দেয়া হচ্ছে। এসব বিলের পরিমাণ শত শত কোটি টাকা। মালিকপক্ষ নিশ্চয়ই যোগাযোগ রাখছেন এবং তারা সহসাই বিল পাবেন। ইতিপূর্বে কখনো এধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, এরূপ চিঠিও দেয়া হয়নি। এখন দেয়া হয়েছে, যাতে গণমাধ্যম, বিশেষত: সংবাদপত্রে কারো বেতন-ভাতা বকেয়া না থাকে সেজন্য।’

ড. হাছান বলেন, ‘আমি সবসময় মন্ত্রী ছিলাম না কিন্তু সাংবাদিকদের সঙ্গে ছিলাম। এখন আমার দায়িত্ব আপনাদের সঙ্গে থাকা, আমি আছি। যখন মন্ত্রী থাকবো না, তখনও আপনাদের সঙ্গে থাকবো। সাংবাদিকদের বিপদে-আপদে সাহায্য করা ও কল্যাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমিও সবসময় আপনাদের সঙ্গে রয়েছি।’

মন্ত্রী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে চিকিৎসক-নার্স, পুলিশ, সেনাবাহিনী, গণমাধ্যমকর্মী ও দায়িত্বপালনরত সবাইকে অভিনন্দন জানান। সম্প্রতি প্রয়াত তিন সাংবাদিকের আত্মার শান্তি ও করোনায় আক্রান্ত প্রায় একশ’ সাংবাদিকের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা জীবনটাকে হাতের মুঠোয় নিয়ে যেমন সম্মুখভাগে কাজ করছে, তেমনি গুজব নিরসনেও সোচ্চার ভূমিকা রাখছে, তাদের অভিনন্দন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মানবজাতি আজ এক মহা চ্যালেঞ্জের মুখে। ভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য যে প্রস্তুতি প্রয়োজন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের উন্নত-সমৃদ্ধ দেশগুলোসহ কারোই তা ছিল না। আমরা লিপ্ত ছিলাম একে অপরের সঙ্গে অস্ত্রের প্রতিযোগিতায়। অথচ, ১৮ বছর দীর্ঘ মার্কিন-ভিয়েতনাম যুদ্ধে ৫৬ হাজারের মতো মার্কিন সেনা নিহত হয়েছিল, সেখানে দু’মাসেই করোনায় এপর্যন্ত পৌনে এক লাখের বেশি মার্কিনী প্রাণ হারিয়েছে। ’

তথ্যমন্ত্রী বলেন,’‘ভবিষ্যতেও যুদ্ধ-বিগ্রহ নয়, এধরনের মহামারীতেই লোকক্ষয়ের আশংকাই বেশি বলে আমি মনে করি, আর তা মোকাবেলার জন্য গবেষণা ও সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই”।

ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) ও কোভিড-১৯ রেসপন্স প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. ইকবাল কবীর, আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ সভাপতি সাইদুর রহমান সাইদ, সাধারণ সম্পাদক শেখ আজগর নস্কর, ডিআরইউ’র সহসভাপতি নজরুল কবীর, কল্যাণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ, দৈনিক বর্তমানের প্রধান প্রতিবেদক মোতাহার হোসেন, আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ কেন্দ্রীয় সদস্য শফিউল আলম শফিক প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three − one =

Back to top button