গরু জবাই, মাংস খাওয়া নিয়ন্ত্রণে বিল পাস ভারতের অসম রাজ্যে
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অসমে রাজ্য সরকার গরু জবাই, মাংস খাওয়া ও পরিবহন নিয়ন্ত্রণে একটি বিল পাস করেছে।
স্পিকার বিশ্বজিৎ দাইমারি বিধানসভায় শুক্রবার “অসম গরু সংরক্ষণ বিল-২০২১” পাস হয়েছে বলে ঘোষণা দেন। বিদ্যমান অসম গরু সংরক্ষণ আইন, ১৯৫০-এর পরিবর্তে কার্যকর হবে নতুন এই বিলটি।গরু
এনডিটিভির একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কোনো নির্দিষ্ট কমিটির কাছে না পাঠিয়েই বিলটি পাস করা হয়েছে। এর ফলে প্রতিবাদে অধিবেশন বর্জন করেন বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা।
বিলটিতে গরু জবাইয়ের আগে সরকারের অনুমতি নেয়া এবং শুধু নিবন্ধিত কসাইখানায় জবাইয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত শর্মা বিশ্বাসের মতে, “নতুন বিলটির মাধ্যমে গোমাংসকেন্দ্রিক সাম্প্রদায়িক সংঘাত নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।”
হিমন্ত শর্মা বলেন, “১৯৫০ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের গৃহীত আইনটির আধুনিকায়ন করা হয়েছে নতুন বিলে। ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর চিন্তা আর সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদের প্রতিফলন রয়েছে এতে।”
এই বিলটি পাসের ফলে রাজ্যের কোনো মন্দির বা মঠের পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে গরু জবাই, মাংস বিক্রি বা খাওয়া যাবে না। হিন্দু, জৈন, শিখসহ ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে গরুর মাংস না খাওয়া যেকোনো সম্প্রদায়ের বসবাসের এলাকা ও ধর্মীয় উপাসনালয়ের ক্ষেত্রে এ নীতি প্রযোজ্য হবে।
নিষিদ্ধ করা হয়েছে বাছুর থেকে শুরু করে ১৪ বছরের কম বয়সী গরু জবাই। বিলটিতে পুরুষ ও স্ত্রী ষাঁড় ও মহিষ, গরু, গাভী, বাছুর, বকনা বাছুর ইত্যাদিকে গরু হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
নতুন এই আইনে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গরু পরিবহনও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কৃষিকাজের কারণে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গরু স্থানান্তরের দরকার হলে আগে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে, পরিবহনের সময় সঙ্গে থাকতে হবে অনুমতিপত্র।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত শর্মা আরও বলেন, “গত পাঁচ বছর বা তার আগেও রাজ্যে যত সাম্প্রদায়িক সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে, সবগুলোরই কারণ ছিল গোমাংস। নতুন বিলের ফলে গোমাংস না খাওয়া ব্যক্তিদের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ব্যক্তি গোমাংস না খেলে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বেরও কোনো সুযোগ নেই। উত্তর প্রদেশে গরুর মাংস খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু অসমের মোট জনগোষ্ঠীর ৩৬ শতাংশ গোমাংস পছন্দ করে বলে বিক্রি পুরোপুরি নিষিদ্ধ না করে শুধু নিয়ন্ত্রণে এনেছে সরকার।”
রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অনুমতি সাপেক্ষে অসম থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যে গরু পরিবহন করা যাবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। ভারতের রাজস্থান আর মধ্য প্রদেশের গরুর মাংস জবাই আইন করে নিষিদ্ধ হয়েছে আগেই।