আন্তর্জাতিককরোনাভাইরাসপ্রকৃতি ও জলবায়ূ

গহীন অ্যামাজনেও করোনার থাবা, আক্রান্ত এক

বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের কালো থাবা থেকে নিস্তার পায়নি আধুনিক বিশ্বের বড় কোনো দেশই। এবার করোনার প্রকোপ হানা দিয়েছে পৃথিবীর ফুসফুসখ্যাত অ্যামাজন বনাঞ্চলেও।

ব্রাজিল গতকাল বুধবার জানিয়েছে, অ্যামাজনের নিভৃতচারী ও জনবিচ্ছিন্ন ইয়ানোমামি আদিবাসী গোষ্ঠীর কারো মধ্যে এই প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ইয়ানোমামি গোষ্ঠী বরারবই বিদেশি রোগের বিরুদ্ধে নাজুক বলেই পরিচিত।

ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী লুইজ হেনরিক ম্যানডেট্টা গতকাল এক সংবাদ সম্মেলেন বলেন, ‘আমরা আজ ইয়ানোমামি গোষ্ঠীর মধ্যে একজনকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত করেছি, যা খুবই চিন্তার বিষয়।’ বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

বহির্বিশ্ব থেকে প্রায় একেবারেই বিচ্ছিন্ন ইয়ানোমামি আদিবাসীরা। তবুও রেহাই মিলল না করোনার কাছ থেকে। জানা গেছে, ১৫ বছর বয়সী এক ইয়ানোমামি আদিবাসী কিশোর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী লুইজ হেনরিক ম্যানডেট্টা এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আদিবাসীদের করোনা নিয়ে সচেতন করতে হবে, কারণ অ্যামাজনের আদিবাসীদের মধ্যে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে তার ফল সুদূরপ্রসারী হতে পারে। তাই আদিবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো খুবই প্রয়োজন। তা না হলে, গোষ্ঠী সংক্রমণ এড়ানো যাবে না।

অন্যদিকে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ও গ্লোবো জানিয়েছে, অ্যামাজনের আদিবাসীদের মধ্যে মোট সাতজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। কিছুদিন আগে কোকামা আদিবাসী গোষ্ঠীর ২০ বছরের এক তরুণীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। ওই তরুণী একজন স্বাস্থ্যকর্মী। তিনি যে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে কাজ করতেন, তাঁর শরীরে প্রথমে করোনার সংক্রমণ হয়েছিল। ওই চিকিৎসকের শরীর থেকেই আরো বেশ কয়েকজন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন বলে জানা যায়।

ব্রাজিলের অ্যামাজন বনভূমিতে প্রায় আট লাখ আদিবাসীর বসবাস। সেখানে ৩০০টি আদিবাসী গোষ্ঠী রয়েছে। তাই আদিবাসীদের মধ্যে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা প্রবল। আক্রান্ত ইয়ানোমামি আদিবাসী কিশোরকে উত্তর ব্রাজিলের প্রদেশ রোরাইমার রাজধানী বোয়া ভিস্তার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে চিকিৎসার জন্য। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছে ওই কিশোর।

বিশ শতকের আগ পর্যন্ত ইয়ানোমামি আদিবাসীরা বহির্বিশ্ব থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন ছিল। ১৯৭০ সালে ম্যালেরিয়া ও মিসেলসের মতন মরণব্যাধি ওই জনগোষ্ঠীকে বিধ্বস্ত করেছিল। ইয়ানোমামিরা মূলত মুখমণ্ডলে আঁকিবুকি ও শরীর ফোঁড়ানোর (পিয়ার্সিং)এর জন্য পরিচিত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + five =

Back to top button