দেশবাংলা

গোপালগঞ্জে খালে বাঁধ দিয়ে ইউপি সদস্যের মাছ চাষ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় খাগবাড়ি খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ও তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে ওই বাঁধ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে এলাকার প্রায় দেড় শতাধিক পরিবারকে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে তাদের বাড়িঘর ডুবে যায়। নৌকা নিয়ে খালে তারা চলাচল করতে পারে না।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খাগবাড়ি বিষ্ণুমন্দির–সংলগ্ন খাগবাড়ি খালের মুখে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন রামশীল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মনোরঞ্জন জয়ধর ও তাঁর ভাই বিশ্বনাথ জয়ধর।

গত জুনে তাঁরা এই খালের মুখে বাঁধ দেন। এর ফলে বৃষ্টি হলেই অনেকের বাড়িঘর তলিয়ে যায়। অপর দিকে নৌকা নিয়ে চলাচল করা যায় না। সামনে বোরো মৌসুমে এলাকার চাষিরা সেচসুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

ত্রিমুখী বাজার থেকে উত্তর দিকে যেতেই ত্রিমুখী জহরের কান্দি সড়কের খাগবাড়ি বিষ্ণুমন্দির। এই মন্দিরের পাশেই ওই সড়কে একটি ছোট সেতু। এর নিচ দিয়ে পশ্চিম দিকে বয়ে গেছে খাগবাড়ি খাল। গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর নিচে মাটি, বাঁশ ও জাল দিয়ে বাঁধ দেওয়া। খালের পাড় দিয়ে পশ্চিম দিকে যেতে দেখা যায়, মাটি দিয়ে আরও একটি বাঁধ দেওয়া।

খাগবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ভরত চৌধুরী বলেন, খাগবাড়ি বিষ্ণুমন্দিরের পাশ দিয়ে পশ্চিম দিকের খালটি গ্রামের পশ্চিম পাশের সরকারি জলাশয়ে গিয়ে মিশেছে। এ খালে শ্যালো মেশিন বসিয়ে গ্রামের অনেকে বোরো মৌসুমে ধান চাষ করেন। বর্ষা মৌসুমে নৌকা চলে খালে। কিন্তু গ্রামের ক্ষমতাধর মনোরঞ্জন জয়ধর ও তাঁর ভাইয়েরা মিলে খালটি দখল করে মাছ চাষ করছেন। এলাকার লোকজনের ক্ষতি হলেও কেউ মুখ খুলছেন না। কেউ তাঁদের বিরুদ্ধে কথা বললে তাঁকে অত্যাচার করা হয়।

গ্রামের সর্বানন্দ মল্লিক ও রাখাল চন্দ্র হালদার বলেন, ‘আমরা এ খাল দিয়ে নৌকা নিয়ে যাতায়াত করতাম, এখন আর পারি না। কারণ, এখন খালের মুখে বাঁধ। বোরো মৌসুমে সেচসুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হবে।’

দুপুরে ইউপি সদস্য মনোরঞ্জন জয়ধরের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর ভাই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ জয়ধর এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

রামশীল ইউপির চেয়ারম্যান খোকন বালা বলেন, ‘খাগবাড়ি বিষ্ণুমন্দির–সংলগ্ন খালের মুখে বাঁধ দিয়ে এলাকার একটি পরিবার মাছ চাষ করছেন বলে আমি শুনেছি। জনস্বার্থে বাঁধটি কেটে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
কোটালীপাড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহাসিন উদ্দীন বলেন, বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এক-দুই দিনের মধ্যে সরেজমিনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × five =

Back to top button