ঘরের বাইরে প্রাণঘাতী করোনার ছোবল থেকে বাঁচবেন যেভাবে
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর বিষাক্ত ছোবলে যেন ভেঙেচুরে যাচ্ছে পুরো পৃথিবী। আকারে ছোট্ট এই আণুবীক্ষণিক জীব সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ইতোমধ্যেই বিশ্বজুড়ে কেড়ে নিয়েছে হাজার হাজার প্রাণ। একই সঙ্গে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার ৫ মে পর্যন্ত লকডাউনের সময়কাল বাড়িয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা সংক্রমণ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগেই লকডাউন শিথিল করতে হবে। কেননা মহামারি ঠেকানোর পাশাপাশি মানুষের বেঁচে থাকা যেমন জরুরি; সমানভাবে জরুরি অর্থনীতির চাকা সচল রাখা। তা না হলে মানুষ না খেয়ে মারা যাওয়ার পরিস্থিতিও সৃষ্টি হতে পারে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। সেদিকে নজর রেখেই এবার অন্যান্য জরুরি সেবার পাশাপাশি ১৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যক্রম ঢাকা ও সারাদেশে সীমিত পর্যায়ে খোলা থাকবে।
এছাড়া ওষুধশিল্প, উৎপাদন ও রপ্তানিসহ সব কল-কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে চালু রাখা হবে। ফলে কাজের জন্য মানুষকে বাইরে বের হতে হবে। এই পরিস্থিতিতে বাইরে বের হলে আমরা যেন সংক্রমিত হয়ে না পড়ি, সে বিষয়ে থাকতে হবে অনেক বেশি সচেতন।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে মনে রাখতে হবে এবং মেনে চলতে হবে কয়েকটি বিষয়। কিছু সাবধানতা মেনে চললে করোনা সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর বাইরে বের হলে কোনো ঝুঁকি না নিয়ে সব সময় মাস্ক ব্যবহার করুন। সঙ্গে রাখুন হ্যান্ড স্যানিটাইজার। যাতে প্রয়োজনে তা দিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই হাত পরিষ্কার করতে পারেন। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় ছোঁয়াছুঁয়ি এড়িয়ে চলুন। অনেক দিন পর সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা হবে তখন সবাই মিলে জড়ো হয়ে আড্ডায় না মেতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে গল্প করুন। এর পাশাপাশি মেনে চলুন নিচের কিছু টিপস।
এড়িয়ে চলুন গণপরিবহন
কাজের প্রয়োজনে বাইরে বের হলেও গণপরিবহন যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। বাস, ট্রেন কিংবা অন্য যে কোনো ধরনের পরিবহনের হাতল কিংবা আসনে করোনা ভাইরাস থাকতে পারে। সেজন্য যে কোনো পরিবহনে চলাফেরার ক্ষেত্রে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা এবং সেখান থেকে নেমে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
কর্মক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন খুব জরুরি
অফিসে একই ডেস্ক এবং কম্পিউটার ব্যবহার করলেও ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাঁচি-কাশি থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ায়। যে কোনো জায়গায় করোনা ভাইরাস কয়েক ঘণ্টা সক্রিয় থাকে। এজন্য অফিসের চেয়ারে বসার আগে চেয়ার, ডেস্ক, কম্পিউটার, কিবোর্ড এবং মাউস পরিষ্কার করে নিন।
ভিড় এড়িয়ে চলুন
যেসব জায়গায় মানুষ বেশি জড়ো হয় সেসব স্থান এড়িয়ে চলা কিংবা বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে বাজার, মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় স্থান প্রভৃতি।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে চেষ্টা করুন এটিএম বুথ ও ড্রপবক্স ব্যবহার করার। ব্যাংকে গেলেও ফরম পূরণের যে কলম রাখা থাকে তা ব্যবহার না করে নিজের কলম সঙ্গে নিন। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে। এছাড়া টাকা উত্তোলনের জন্য যে এটিএম বুথ ব্যবহার করা, সেখান থেকেও সংক্রমণ হতে পারে। তাই হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করুন। কারণ এটিএম বুথের বাটন অনেকে ব্যবহার করে।
লিফট
ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে আরেকটি জায়গা হতে পারে লিফট। লিফটের বাটন স্পর্শের আগে টিস্যু, হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করুন। কারণ প্রতিদিন শতশত মানুষ লিফট ব্যবহার করছেন। এদের মধ্যে কেউ যদি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী থাকেন তাহলে তার স্পর্শের মাধ্যমে অন্যের শরীরে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।