Lead Newsজাতীয়

পানি নেমে যাওয়ায় নিজ নিজ ঘরে ফিরছেন উপকূলবাসী

ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’-এর প্রভাবে রাতভর আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেয়া বাগেরহাটের প্রায় তিন লাখ উপকূলীয় অধিবাসী বৃহস্পতিবার সকালে নিজ নিজ গৃহে ফিরতে শুরু করেছেন।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ উদ জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সকালে পানি নেমে গেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ নির্মাণে কাজ শুরু করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।

তিনি জানান, ঝড়ে ভেসে গেছে জেলার চার হাজার ৬৩৫টি চিংড়ি ঘের। ক্ষতি হয়েছে আউস ধানসহ গ্রীষ্মকালীন সবজির।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানান, বড় কোনো ক্ষতি ছাড়াই ঘূর্ণিঝড় আম্পান উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট অতিক্রম করে। ঝড়ে কিছু কাঁচাবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে গেছে। ঝড়ের আগে জেলার এক হাজার ৩১টি সাইক্লোন শেল্টার ও আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া প্রায় ৩ লাখ উপকূলীবাসী সকালে নিজ নিজ গৃহে ফিরতে শুরু করেছেন। জেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতি নিরূপণের জন্য জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ অধিদফতর কাজ শুরু করেছে।

বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক রঘুনাথ কর বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আগেই জেলার বোরো ধান কৃষকরা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। তবে ঝড়ে আউস ও গ্রীষ্মকালীন সবজির ক্ষতি হয়েছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণের জন্য মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. খালেদ কনক জানান, ঝড়ে জেলার ৪ হাজার ৬৩৫টি মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। এতে জেলার মৎস্যচাষিরা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

জেলার চিংড়ি উৎপাদানে প্রধান এলাকা মোংলার শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, রামপাল ও সদর উপজেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বন তলিয়ে যাওয়ায় সুন্দরবনের কটকা, দুবলা, চরাপুটিয়া ও কোকিলমুনি বন অফিসের কম্পাউন্ডে দলবেঁধে কয়েকশ হরিণ আশ্রয় নিয়েছিল। ঝড়ের অগ্রভাগ সুন্দরবনে প্রথমে আঘাত হানে। রাতভর চলে জড়ের তাণ্ডব। প্রাথমিকভাবে বনের আটটি অফিসের টিনের চালা উড়ে গেছে।

এ ছাড়া ৫টি অফিসের জেটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। বনের গাছপালার সামান্য ক্ষতি হলেও এখনও পূর্ণাঙ্গ ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। বনের অভ্যন্তরের আশ্রয় নেয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরাপদে রয়েছেন। ঝড়ে কোনো বন্যপ্রাণী মারা যাওয়ার খবর এখন পাওয়া যায়নি।

এদিকে রাতভর ঝড়ের তাণ্ডবে বিদ্যুৎ বিছিন্ন হয়ে পড়ে গোলা জেলা। ঝড়ে গাছপালা পড়ে বিচ্ছিন্ন রয়েছে প্রত্যন্ত এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ। তবে সকাল থেকেই জেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ লাইন সচল করতে কাজ শুরু করেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা। তবে অধিকাংশ এলাকায় এখন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা সম্ভব হয়নি বলে জানান ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুর কুমার সরকার।

অন্যদিকে পল্লি বিদ্যুতের জিএম জাকির হোসেন জানান, অনেক এলাকায় ঝড়ে গাছ পড়ে তার ছিঁড়ে যাওয়ায় জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ লাইন চালু করতে সময়ের প্রয়োজন বলে দাবি করেন এ কর্মকর্তা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten − 6 =

Back to top button