Lead Newsশিল্প ও বাণিজ্য

চাঙা বস্ত্র খাত; নেপথ্যে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্রয়াদেশ

১০ বিলিয়ন ডলার ক্রয়াদেশের খবরে চাঙা বস্ত্র খাত। পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতের শেয়ারে ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

গত বছরের রপ্তানির এক তৃতীয়াংশের বেশি আদেশ পাওয়ার খবর প্রকাশের পর দিন বস্ত্র খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র চারটির শেয়ার দর কমেছে। বাকি ৫৪টি কোম্পানির দর বেড়েছে। অবশ্য সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধির তালিকায় এই খাতের প্রাধান্য ছিল না।

জুন ও জুলাই মাসে পোশাক খাতে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ক্রয়াদেশের খবর প্রকাশের পর দিন পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতে ব্যাপক চাঙাভাব দেখা দিয়েছে। এই খাতের প্রায় সব কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনও হয়েছে ব্যাপক। আগের কর্মদিবসের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে ১০০ কোটি টাকারও বেশি।

আগের দিন নিউজবাংলার এক খবরে প্রকাশ পায় ১০ বিলিয়ন ডলার বা ৮৫ হাজার কোটি টাকার যে ক্রয়াদেশ পাওয়া গেছে, সেটি চলতি আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিপমেন্ট করতে হবে। এই আদেশ গত এক বছরের মোট রপ্তানির প্রায় ৩৫ শতাংশ।
করোনাকালে এই আদেশ তৈরি পোশাক খাতের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে আর পোশাক খাতের শেয়ারে তাই দেখা দিয়েছে নতুন করে আগ্রহ।
গত দুই কর্মদিবসে এই খাতের শেয়ারদর এমনিতেই বাড়ছিল। আর নতুন অর্ডারের খবরে তা বাড়ে আরও বেশি।

দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি শেষে রোববার পুঁজিবাজার বন্ধ ছিল সেদিন ব্যাংকে লেনদেন বন্ধ থাকায়। সোমবার পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে বস্ত্র খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র চারটির শেয়ার দর কমেছে। বাকি ৫৪টি কোম্পানির দর বেড়েছে। অবশ্য সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধির তালিকায় এই খাতের প্রাধান্য ছিল না।

ব্যাংকে লেনদেনের সময় এক ঘণ্টা বাড়ায় আজ থেকে পুঁজিবাজারেও লেনদেন এক ঘণ্টা বাড়িয়ে বেলা দুইটা পর্যন্ত করা হয়েছে। আর সকালে লেনদেনের শুরু থেকেই বাজারে দেখা দেয় চাঙাভাব। বস্ত্রের হাত ধরে বাজার এগিয়ে গেলেও পরে যোগ হয় ওষুধ ও রসায়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক ও প্রকৌশল এবং ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক খাতের শেয়ার দরও বাড়ে।

সব মিলিয়ে পুঁজিবাজারে সূচক পাড়ে ৫০ পয়েন্টের বেশি। আর ২০ জুনের পর প্রথমবারের মতো লেনদেন ছাড়ায় দুই হাজার কোটি টাকার ঘর।
১০টা ৭ মিনিটে সূচক ৬ হাজার ৪২৫ পয়েন্ট থেকে বেড়ে হয় ৬ হাজার ৪৬১ পয়েন্টে। এরপর কিছুটা ঠাক্কা লাগে সূচকে। উত্থানে গতি খানিকটা কমে ১০টা ২০ মিনিটে সূচক নেমে আসে ৬ হাজার ৪৪৮ পয়েন্টে। চলতে থাকে লেনদেন। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ১১ টা ১৬ ও ১ টা ২৫ মিনিটে দিনের সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ হাজার ৪৭৫ ও ৬ হাজার ৪৮৩ পয়েন্টে।
দিন শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে এক পর্যায়ে তা ৬ হাজার ৪৯১ পয়েন্ট পর্যন্ত পৌঁছে। তবে পরে সমন্বয়ে ১০ পয়েন্ট কমে শেষ হয় লেনদেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের এই সূচক ২০১১ সালের ২৮ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ। ওই দিন পুঁজিবাজারের ডিএসই সূচক ছিল ৬ হাজার ৫৮৭ পয়েন্ট। যদিও এখন আর ডিএসই সূচক নেই। ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি চালু হয় ডিএসইএক্স সূচক।
এই ডিএসই ও ডিএসইএক্স সূচকের তুলনা করলে দেখা যায়, চালুর দিন ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৪ হাজার ৫৫। তবে সেদিন ডিএসই সূচকের মানদণ্ডে তা ছিল ৪ হাজার ১৭১ পয়েন্ট।

চাঙা বাজারে ব্যাপকভাবে হতাশ করেছে বিমা খাত। বস্ত্রে যেমন প্রায় সব কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে, তেমনি উল্টোভাবে এই খাতে কমেছে প্রায় সব কোম্পানির শেয়ার দর। অর্ধবার্ষিক মুনাফায় চমক দেখানো ব্যাংক খাতে আবারও গেল একটি মন্দা দিন। যেসব কোম্পানির দাম বেড়েছে, সেগুলোর বেড়েছে একেবারেই নগণ্য পরিমাণে। তেমনি যেগুলো দর হারিয়েছে, সেগুলোর পতনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে নয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × two =

Back to top button