আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প-তালেবানের চুক্তিই আফগানিস্তানে মার্কিনীদের নাস্তানাবুদের জন্য দায়ী?

এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তাদের একাংশ দাবি করছে যে, আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর নাস্তানাবুদের পেছনে ট্রাম্প-তালেবান চুক্তিই দায়ী।

মার্কিন কংগ্রেসের সামরিক বাহিনী বিষয়ক কমিটি ‘হাউস আর্মড সার্ভিস কমিটির’ বুধবারের বৈঠকে এই অভিযোগ করেন তারা।

আফগানিস্তানে মার্কিন সমর্থনপুষ্ট সরকার ও সামরিক বাহিনীর পতনের সাথে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীন মার্কিন প্রশাসন ও তালেবানের মধ্যে গত বছর স্বাক্ষরিত চুক্তিকে দায়ী করছেন মার্কিন সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি বলেন, “কাতারের দোহায় গত বছর চুক্তি স্বাক্ষরের পর আফগান সরকারের দুর্বলতা তরান্বিত হয়। আফগান সরকার ও সামরিক বাহিনীর ওপর দোহা চুক্তি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

অপরদিকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বৈঠকে জানান, “তিনি ম্যাকেঞ্জির বক্তব্যের সাথে একমত। দোহা চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্র তালেবানের ওপর বিমান হামলা বন্ধ করে দেয়। ফলে তারা শক্তিশারী হয়ে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে এবং আফগান নিরাপত্তা বাহিনী বিপুল লোক হারায়।”

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার জেরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ হামলার জন্য আফগানিস্তানে আশ্রয়ে থাকা আলকায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে দায়ী করেন। ওই সময় আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের কাছে ওসামা বিন লাদেনকে মার্কিন প্রশাসনের হাতে তুলে দেয়ার দাবি জানান বুশ।

তালেবান সরকার ওসামা বিন লাদেনকে তুলে দেয়ার পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে মার্কিনিদের কাছে প্রমাণ চায়। প্রমাণ ছাড়া তারা ওসামা বিন লাদেনকে মার্কিন প্রশাসনের কাছে তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

বুশ প্রশাসন ও তালেবানের মধ্যে বিরোধের জেরে ২০০১ সালের অক্টোবরে আফগানিস্তানে আগ্রাসন শুরু করে মার্কিন বাহিনী। অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রসজ্জ্বিত মার্কিন সৈন্যদের হামলায় তালেবান সরকার পিছু হটতে বাধ্য হয়।তবে একটানা দুই দশক যুদ্ধ চলতে থাকে দেশটিতে।

দীর্ঘ দুই দশক আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বের বহুজাতিক বাহিনীর দখলের পর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাতারের দোহায় এক দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করতে সম্মত হয় যুক্তরাষ্ট্র। এর বিপরীতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অংশ নিতে তালেবান সম্মত হয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণা অনুসারে ৩১ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে বহুজাতিক বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের ডেডলাইন থাকলেও ৩০ আগস্ট সম্পূর্ণ সৈন্য প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়।

সূত্র : আল জাজিরা

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × four =

Back to top button