আন্তর্জাতিক

তালেবানে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে সতর্ক করলেন আখুন্দজাদা

তালেবানের প্রধান মোল্লা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা সতর্ক করে বলেছেন, দলের মধ্যে কিছু ‘অপরিচিত অনুপ্রবেশকারী’ রয়েছে, যারা দলীয় আদর্শের বিরোধী কাজ করছে।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানান তিনি।তালেবান সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই বিবৃতি প্রকাশিত হয়।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সব নেতারা তাদের দলের মধ্যে সতর্কতার সাথে নজরদারি করবেন এবং সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করা অপরিচিত উপদানগুলো লক্ষ্য করবেন। যত শিগগির সম্ভব তাদের অবশ্যই অপসারণ করতে হবে।’

মোল্লা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা বলেন, ‘কোনো ত্রুটি হলে নেতারা এর পরিণতির জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে দায়ী থাকবেন।’

আগস্টে আফগান প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে আসার পর থেকে দেশটিতে বিরোধীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে তারা। তা সত্বেও ‘তালেবানের’ পরিচয়ে বেশ কিছু হত্যাকাণ্ড ও অপরাধের ঘটনা ঘটে। তালেবান এই বিষয়ে সকলকে সতর্ক করে আসছে।

গত সেপ্টেম্বরে তালেবানের সামরিক প্রধান এবং আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব এক অডিও বার্তায় একইরকম সতর্কতা জানিয়েছিলেন।

অডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘কিছু দুর্বৃত্ত ও দুর্নীতিগ্রস্ত লোক আমাদের সাথে যোগ দিয়ে তাদের নিজস্ব স্বার্থ পূরণ করতে বা আমাদের বদনাম করতে এবং আমাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চায়।’

দীর্ঘ দুই দশক আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বের বহুজাতিক বাহিনীর দখলের পর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাতারের দোহায় এক দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করতে সম্মত হয় যুক্তরাষ্ট্র। এর বিপরীতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অংশ নিতে তালেবান সম্মত হয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণা অনুসারে ৩১ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে বহুজাতিক বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের ডেডলাইন থাকলেও ৩০ আগস্ট সম্পূর্ণ সৈন্য প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়।

মার্কিনিদের সাথে চুক্তি অনুসারে ক্ষমতাসীন থাকা মার্কিন সমর্থনপুষ্ট আফগান সরকারের সমঝোতার জন্য তালেবান চেষ্টা করলেও দুই পক্ষের মধ্যে কোনো সমঝোতা হয়নি। তালেবানের অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির নেতৃত্বাধীন আফগান সরকার দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি।

এর পরিপ্রেক্ষিতে মে মাসে বহুজাতিক বাহিনীর প্রত্যাহারের মধ্যেই পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণ নিতে অভিযান চালানো শুরু করে তালেবান।

৬ আগস্ট প্রথম প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলীয় নিমরোজ প্রদেশের রাজধানী যারানজ দখল করে তারা। যারানজ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার ১০ দিনের মাথায় কেন্দ্রীয় রাজধানী কাবুলে পৌঁছে যায় তালেবান যোদ্ধারা। তালেবান যোদ্ধারা অগ্রসর হতে থাকায় ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। গনির কাবুল ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার জেরে আফগান প্রশাসন ভেঙে পড়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই দিনই কাবুলে প্রবেশ করে তালেবান যোদ্ধারা।

সূত্র : আলজাজিরা ও টিআরটি ওয়ার্ল্ড

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − 8 =

Back to top button