শুনতে অবাক লাগলেও ঘটনা সত্যি । ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত ঘোষণার পর কবরস্থানে দাফন করার সময় হঠাৎ জীবিত হয়ে উঠেছে এক নবজাতক।
কবরস্থান থেকে এনে আবার ঢাকা মেডিকেলের নবজাতক বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে তাকে ।
আজ শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সকালে রায়েরবাগ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফনের সময় জীবিত হয় নবজাতকটি।
নবাজাতকের বাবা ইয়াছিন জানান, ৬ মাস ১৬ দিনের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী শাহিনুর বেগমকে গত বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি করার পর সেখানকার চিকিৎসকরা তার স্ত্রীকে দেখেন এবং জানান তার প্রেশার অনেক হাই। বাচ্চাটি ডেলিভারি না করালে তার প্রেশার কমবে না বলেও জানান চিকিৎসকরা ।
এমতাবস্থায়, চিকিৎসকদের কথামতো বুধবার রাতেই তাকে লেবার রুমে নিয়ে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করা হয় বলে জানান ইয়াছিন ।
ইয়াছিন আরও জানান, ডেলিভারি না হওয়ায় তাকে ১১০ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়। সেখানে দু’দিন চেষ্টার পর আজ শুক্রবার ভোরে তার আবার ব্যথা শুরু হয়। শুক্রবার ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে শাহিনুরের এক মেয়ে বাচ্চা হয়। কিছুক্ষণ পর চিকিৎসকরা জানান, বাচ্চাটি মৃত অবস্থায় হয়েছে। এরপর হাসপাতালের আয়া মৃত বাচ্চাটিকে প্যাকেট করে বেডের নিচে রেখে দেয় এবং কোথাও নিয়ে দাফন করার জন্য বলে।
আজ সকাল ৮টার দিকে ইয়াছিন মৃত নবজাতকটিকে আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যান কিন্তু ফি দিতে না পারায় তাদের পরামর্শে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নিয়ে যায়। সেখানে ৫০০ টাকা ফি ও কিছু বকশিস দেওয়ার পর মৃত নবজাতকটির জন্য কবর খোঁড়া শুরু হয়। কবর খোঁড়ার শেষ পর্যায়ে তখন কান্নাকাটি শব্দ শুনতে পান। তিনি ও অন্য লোকজন আশপাশে কোথাও কিছু না পেয়ে পরে নবজাতকটির দিকে খেয়াল করেন। এরপর প্যাকেট খুলে দেখেন বাচ্চাটি নড়াচড়া করছে ও কান্নাকাটি করছে। এরপরই তাকে দ্রুত আবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসে নবজাতক বিভাগে ভর্তি করা হয় ।
চিকিৎসকদের এমন ভুল সিদ্ধান্ত ও পরামর্শের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নবজাতকটির বাবা ইয়াছিন ।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নবজাতকটি জীবিত আছেন, ভালো আছেন, তাকে নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়েছে। নবজাতক শিশুটি অপরিপক্ব হয়ে জন্ম নিয়েছে। শিশুটির মায়ের একলামশিয়া ছিল। যে চিকিৎসক দায়িত্বে ছিল তার কোনো গাফিলতি ছিল কিনা। আমরা সেটা দেখবো।’ এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।