Lead Newsজাতীয়

দেশে পর্যাপ্ত রি-এজেন্ট নেই, করোনা শনাক্ত হবে কিভাবে?

নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্তকরণে দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে রি-এজেন্টের মজুত নেই। বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর ল্যাবরেটরিতে বিদেশফেরত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহভাজনদের মুখের লালা বা নাকের শ্লেষ্মার নমুনা ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।

গত ২১ জানুয়ারি থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ (ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট) অন্যান্য স্থল, সমুদ্র ও রেলস্টেশনে আগত বিদেশফেরত ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭০৫ যাত্রীর হেলথ স্ক্রিনিং পাওয়া যায়নি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে রি-এজেন্টের (পিসিআর প্রাইমারি প্রোব রি-এজেন্ট) সঙ্কট রয়েছে। চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ রোগটি ছড়িয়ে পড়ার পর বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে এ ভাইরাস শনাক্তকরণে রি-এজেন্ট আবিষ্কার করেছেন। এর ফলে রি-এজেন্টের বিশ্বব্যাপী সঙ্কট রয়েছে। বর্তমানে দেশে মাত্র দেড় সহস্রাধিক ব্যক্তির পরীক্ষা-নিরীক্ষার রি-এজেন্টের মজুত রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এ রি-এজেন্ট পাওয়া গেছে।

সরকারি সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত (অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল ইত্যাদি) আইইডিসিআরে প্রতিটি নমুনা পরীক্ষার জন্য কমবেশি ৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এখন পর্যন্ত সরকারি খরচেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।

রি-এজেন্টের স্বল্পতার কারণে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সবার জন্য করোনা টেস্টের প্রয়োজন নেই। আক্রান্ত দেশ থেকে যারা ফিরেছেন কিংবা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন এমন ব্যক্তির মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ বা উপসর্গ (জ্বর, ঠান্ডা, কাশি ও শ্বাসকষ্ট) থাকলে তবেই তাদের পরীক্ষার প্রয়োজন হয়।

ছোঁয়াচে এ রোগটিতে দেশের অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত হলে রি-এজেন্ট সঙ্কটে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যাঘাত ঘটবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর নির্দিষ্ট কোনো এলাকায় রোগী বেশি আক্রান্ত হতে শুরু করলে রোগতত্ত্ববিদরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে ওই এলাকাকে করোনা প্রবণ বলে ঘোষণা করবে এবং সে এলাকা কোয়ারেন্টাইন করবে। সেক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্যক্তির পরীক্ষা-নিরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর আর ল্যাব টেস্টের প্রয়োজন হবে না। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে।

আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারা বিশ্বেই রি-এজেন্টের সঙ্কট রয়েছে। যে সব দেশে অধিক সংখ্যক মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেশি সে সব দেশকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রি-এজেন্ট সরবরাহ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যেহেতু আমাদের দেশে এখনও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি, তাই অগ্রাধিকার বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান অনেক পেছনে। বর্তমানে যে পরিমাণ রি-এজেন্ট রয়েছে তার যৌক্তিক ব্যবহার হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen + 15 =

Back to top button