দেড়মাস পর ঘরের বাইরে স্পেনের শিশুরা
দেড় মাসেরও বেশি সময় পর করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশগুলোর অন্যতম স্পেনে শিশুরা বাইরে বের হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। স্থানীয় সময় রবিবার সকাল ৯টার পর থেকে রাজধানী মাদ্রিদ ছাড়াও গোটা দেশের শিশুদের বাবা-মায়েদের সঙ্গে বাড়ির বাইরে বের হতে দেখা যায়।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্পেনে লকডাউন চলছে। কিন্তু শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে রবিবার থেকে ১৪ বছরের কমবয়সী শিশুদের বাড়ির বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। ফলে ছয় সপ্তাহেরও বেশি সময় জরুরি অবস্থায় ভেতর বাড়িতে থাকার পর মুক্ত বাতাস নিচ্ছে দেশটির শিশুরা।
মাদ্রিদের এল রেতিরো পার্কে বাবা এবং ছয় বছর বয়সী বোনের সঙ্গে হাঁটছিল ৯ বছরের এক শিশু। বাড়ির বাইরে বের হওয়ায় কেমন লাগছে এমন প্রশ্ন করা হলে সিএনএন এর প্রতিনিধিকে সে বলে, এতদিন বাড়িতে থেকে সে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিল। এখন কিছুটা ভালো লাগছে তার।
জরুরি অবস্থা জারি থাকার কারণে স্পেনের মানুষ অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে পারছেন না। দোকানপাট আর অর্থনৈতিক কার্যক্রম ছাড়াও বন্ধ রয়েছে খেলার মাঠ, পার্ক, জাদুঘরসহ অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্র। তাই সরকারের এমন সিদ্ধান্তে শিশু ও তাদের অভিভাবকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, স্পেনের অনূর্ধ্ব ১৪ বছর বয়সী প্রায় ৬৩ লাখ শিশু এখন প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে মাত্র এক ঘণ্টার জন্য বাড়ির বাইরে থাকতে পারবে। তাদের গন্তব্য হবে বাড়ির এক কিলোমিটারের গন্ডির মধ্যে, সঙ্গে থাকবে বাবা-মা কিংবা পরিবারের কোনো জ্যেষ্ঠ ব্যক্তি। আর একদলে তিন জনের বেশি হবে না।
স্পেনে করোনা সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে। রবিবার দেশটিতে নতুন করে ২৮৮ জন মারা গেছে। গত একমাসে দেশটিতে তিনশ এর কম মৃত্যুর রেকর্ড নেই। গত ২০ মার্চ এর চেয়ে কম মৃত্যু ছিল। মাঝখানের এই সময়ে দিনে প্রায় ৯০০ জনের মতো মারা গেছে স্পেনে। এমন অবস্থাকে পরিস্থিতির উন্নতি বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
স্পেনের হেলথ ইমারজেন্সি বিভাগের পরিচালক ফার্নান্দো সিমন আজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিসংখ্যানগতভাবে আজকের দিনটি আমাদের জন্য সুসংবাদের কিন্তু এখনও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তথ্য বলছে সংক্রমণ কমছে কিন্তু আমরা কোনো ভাবে বিধিনিষেধ অমান্য করলে তা বাড়তেও সময় লাগবে না।’