শোবিজ

ধর্মীয় কারণে মিডিয়া ছাড়লেন অ্যানি খান

কেউ আমাকে ভণ্ড বলতে পারেন, খারাপ বলতে পারেন, তাতে আমার কিছু যায় আসেনা

অভিনেত্রী অ্যানি খান মিডিয়াকে জানালেন বাই বাই। কাজ শুরু করেছিলেন শিশুশিল্পী হিসেবে। মিডিয়ায় পা দেওয়ার ঠিক ২৩ বছর পর নিজেকে একদম সরিয়ে নিচ্ছেন ঝলমলে এই দুনিয়া থেকে। অ্যানি খান এই সিদ্ধান্ত নিলেন ধর্মীয় বিধি মোতাবেক জীবন যাপনের জন্যই।

তাঁর পাঁচটি সিরিয়াল বিভিন্ন টিভিতে এই মুহূর্তে প্রচার হচ্ছে। তিনি বললেন, করোনার মধ্যে আমি মোটেও কাজ করতে চাইনা। এমনিতেই সবকিছু থেকে গুটিয়ে আসতে আমার হয়তো একটু সময় লাগবে। তবে মন থেকে চাইছি আল্লাহ যেন আমাকে আর কাজে না ফেরান। ঘরে থাকবো, ইবাদত করবো। উনি চাইলে সবকিছুই সম্ভব।

অ্যানি খান ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, ‘গতবছর থেকেই মনে হচ্ছিল মিডিয়া থেকে দূরে সরে যাবো। জানুয়ারির ২৬ তারিখ থেকে নিজের মধ্যে সিদ্ধান্তটা বেশি করে নাড়া দিতে থাকে। মার্চের ১৯ তারিখ শেষবার শুটিং করেছি। তারপর তো করোনায় সবকিছু বন্ধ হলো। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মিডিয়া ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেইনি। এ সিদ্ধান্ত আমার একান্তই ব্যক্তিগত। কারণ মৃত্যুর পর আমার হিসেব আমাকেই দিতে হবে। তাই আত্মোপলব্ধি থেকেই আমি মিডিয়ার কাজ থেকে সরে যাচ্ছি।

অ্যানি বললেন, ছোট থেকেই টিভিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতাম। ২০১৫ সাল পর্যন্ত অভিনয়ে অনিয়মিত ছিলাম। তারপর থেকে এ পর্যন্ত টানা নাটকে কাজ করে মানুষের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। তবে এবার একেবারেই মিডিয়ার কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছি। সার্বক্ষণিক নামাজ ইবাদতে মগ্ন আছি।

এই অভিনেত্রী বলেন, প্রতিনিয়ত অহরহ মৃত্যুর খবরগুলো যেভাবে শুনছি আগে সেভাবে শোনা যেতো না, শুনলেও নাড়া দিত না। বাবাকে হারালাম, চোখের সামনে কাছের মানুষগুলো ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এগুলোর কারণে রিয়ালাইজেশনগুলো এসেছে। আমি একজন মুসলিম। মুসলিম হিসেবে ধর্মীয় বিষয়গুলো যতোই জানার চেষ্টা করছি ততই ধর্ম বিষয়ক জ্ঞান বাড়ছে। এতে করে অনেককিছুতে বিধিনিষেধ চলে আসছে।

তিনি বলেন, এই করোনাকালে দেখছি অনেকেই সময় কাটছে না বা হতাশামূলক কথাবার্তা বলে যাচ্ছে। কিন্তু আমি নিজে কোনো সময়ই পাচ্ছিনা। জীবনে সময় এতো স্বল্প অনুভব করছি যে মনে হচ্ছে দিনরাত ৪৮ ঘণ্টা হলে ভালো হতো। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করছি, নফল নামাজ পড়ছি, কোরআন হাদিস পড়ছি। অনেককিছু থেকে পিছিয়ে ছিলাম। সবকিছু আমাকে শিখতে হচ্ছে। এসব জানতে শিখতে কখন যে সময় চলে যাচ্ছে নিজেও বুঝতে পারছিনা।

তিনি বলেন, দু মিনিট পরে আমি বাঁচবো কিনা জানিনা। মৃত্যুর পরে অনন্ত কালের জন্য আমি কি সঞ্চয় করলাম? এ সবকিছু চিন্তাভাবনা মিলিয়ে আমি আর মিডিয়ার কাজে ফিরতে চাইছি না। এজন্য

কেউ আমাকে ভণ্ড বলতে পারেন, খারাপ বলতে পারেন। তাতে আমার কিছু যায় আসেনা। আমার রিয়ালাইজেশনগুলো কেমন সেটা একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন।

বিয়ে প্রসঙ্গে বলেন, ঢাকায় আমাদের নিজেদের থাকার একটা জায়গা আছে। বেঁচে থাকলে আগামী বছর বিয়ে করে ফেলবো। একজন সাধারণ মেয়ে বিয়ের পর যেভাবে সংসার নিয়ে সার্ভাইভ করে আমিও তাই করতে চাই। মিডিয়া থেকে সরে গেলে আমার ব্যক্তিগত বিষয়গুলো আর সামনে আনবো না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 + 19 =

Back to top button