জাতীয়প্রকৃতি ও জলবায়ূ

ধীরে ধীরে এগুচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান, সাগরে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত

দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সামান্য উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। আগামী মঙ্গলবার অথবা বুধবার এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বাংলাদেশে পড়তে পারে। এমনটি জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের দুই বন্দরের দিকে ১০ কিলোমিটার আর দুই বন্দরের দিকে ১৫ কিলোমিটার করে এগিয়ে এসেছে ঘূর্ণিঝড়টি। এগিয়ে এসে এখন স্থির অবস্থায় আছে।

এখনও বাতাসের গতি একই রকম আছে। ফলে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানবে কিনা অথবা কত গতিতে আঘাত হানতে পারে তা এখনই বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় সমুদ্রবন্দরগুলোতে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি খুব সামান্য এগিয়েছে। এখনও গতি কম। তবে যত উত্তর দিকে এগুবে এর গতি স্বাভাবিকভাবেই বাড়তে থাকবে। বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানবে কিনা এটা এখনই বলা যাবে না। কারণ, আসার পথে ঝড়ের গতি বেড়ে যেতে পারে। আবার কমেও যেতে পারে। আবার আরও শক্তিশালী হতে পারে, দুর্বলও হয়ে পড়তে পারে। আমরা এখন পর্যবেক্ষণ করছি।’

এদিকে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সামান্য উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ রবিবার (১৭ মে) সকালে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৩৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল, যা গত মধ্যরাতে ছিল এক হাজার ৩৫৫ কিলোমিটার দূরে। একইভাবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে আছে, মধ্যরাতে ছিল এক হাজার ২৯০ কিলোমিটার দূরে। তবে মোংলা ও পায়রার দিকে এগিয়েছে ১৫ কিলোমিটার করে। মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এখন আছে এক হাজার ২৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এখন আছে এক হাজার ২৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মধ্যরাতে এটি এক হাজার ২৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদফতর।

বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা এখনও আগের মতোই আছে। মাঝে মাঝে এটি দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল এবং সেইসঙ্গে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপের সূত্রে জানা যায়, থাইল্যান্ডের দেওয়া নামেই এই ঝড়ের নামকরণ করা হয়েছে। এর আগে গত বছর নভেম্বরে দেশের উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। এই নামটি পাকিস্তানের দেওয়া ছিল।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়া এবং বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্য এলাকার আকাশ মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − 1 =

Back to top button