ক্রিকেট

নামাজ আদায়ে বাঁধা, ‘বোমাবাজ’ বলে হেয় করা হতো মুসলিম ক্রিকেটারকে

আবারও বর্ণবাদ বিতর্কে উত্তাল ইংলিশ ক্রিকেটাঙ্গন। সম্প্রতি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মুসলিম ক্রিকেটার আজিম রফিকের বর্ণবাদের অভিযোগে বিবিসির রেডিও শো থেকে বিতাড়িত হয়েছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন। একই অভিযোগে পদত্যাগ করেছেন কাউন্টি দল ইয়র্কশায়ারের চেয়ারম্যান রজার হাটন।

সেই ঘটনা নিয়ে যখন ইংলিশ ক্রিকেটে তোলপাড় চলছে, তখন বর্ণবাদ আচরণের আরও এক গুরুতর অভিযোগ নিয়ে হাজির এসেক্সের সাবেক মুসলিম ক্রিকেটার জোহেব শরিফ।

৯/১১ ঘটনার পর দিন থেকে তাকে ‘বোমাবাজ’ বলে ডাকা হতো বলে অভিযোগ করেছেন শরিফ। তাকে হেয় করতে ‘কারি মাঞ্চার’ সম্বোধন করতেন সতীর্থরা। এ ছাড়া স্বস্তিতে নামাজ পড়তেও বাধা দেওয়া হতো তাকে।

ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটে আজিম রফিকের বর্ণবাদের অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সম্প্রতি ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড দ্য মিররকে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান জোহেব শরিফ।

এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত শরিফ বলেন, ‘রফিকের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতায় অনেক মিল খুঁজে পাচ্ছি। যা হচ্ছে, তাতে রফিক খুব ভালোভাবে সবার নজরে এনেছেন। সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার ও পেন্টাগনে সন্ত্রাসী হামলার পর দিন আমি অনুশীলন করতে মাঠে যাই। সেদিনই আমার এসেক্সের সতীর্থরা আমাকে বোমাবাজ বলে ডাকা শুরু করেন। শুধু তাই নয়, তখন কারি মাঞ্চার বলে ডাকার বিষয়টিও ওদের কাছে অনেক স্বাভাবিক ছিল। তারা ঠাট্টা-মশকরা করে আমাকে বোমাবাজ বললেও আমার কাছে বিষয়টি বর্ণবাদ আচরণই মনে হয়েছে। সেই সময় আমি কিছু বলিনি। তরুণ সদস্য ছিলাম। ওই সময়ে আপনি এমন কিছু করতে চাইবেন না, যাতে মূল দলে যাওয়ার সুযোগ বাধাগ্রস্ত হয়।’

শুধু কটাক্ষেই নয়, ধর্মীয় আচার-রীতি পালনেই বাধা পেতেন বলে জানান জোহেব শরিফ। তাকে নামাজ পড়ার সুযোগ দেওয়া হতো না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

৩৮ বছর বয়সি এ সাবেক ক্রিকেটার বলেন, ‘মুসলিম হিসেবে নামাজ পড়ার জন্য মাঠের এক কোনা বেছে নিতাম। সেখানে আমাকে নামাজ পড়তে দেওয়া হতো না। এক সিনিয়র খেলোয়াড় বলতেন, এভাবে নামাজ পড়লে দেখতে খারাপ লাগে। তাই আমি গাড়ির মধ্যেই নামাজ পড়তাম।’

পূর্ব লন্ডনের লেটনস্টোনে জন্ম শরীফের। তার বাবা-মা পাকিস্তানের। আট বছর বয়স থেকে এসেক্সের হয়ে খেলা শুরু করেন শরীফ। মূল দলের হয়ে ২০০১ সালে অভিষেক হয় তার।

এসেক্সের দ্বিতীয় দলে ২০০৪ সালে ১০১ গড়ে রান করেছেন। ২০ উইকেট শিকার করেন। এমন দুর্দান্ত অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সের পরও মূল দলের হয়ে মাত্র চার ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন শরীফ।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 + thirteen =

Back to top button