Breakingদেশবাংলা

নারী মেম্বারদের সঙ্গে ঘরের স্ত্রীর মতো আচরণ করেন চেয়ারম্যান!

বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল করিম ও সচিব মারজানা আক্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এই ইউনিয়নের ৬, ৮ ও ৯ সংরক্ষিত আসনের মেম্বার ইয়াসমিন আক্তার।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইউএনও সাহিদা আক্তার।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাকশীমূল ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের জন্ম নিবন্ধন অনলাইন ডাটাবেজ করতে সরকার নির্ধারিত ফি ৫০ টাকার পরিবর্তে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে, যা নির্ধারিত ফি থেকে ৮-৯ গুণ বেশি টাকা আদায় করছেন ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল করিম ও সচিব মারজানা আক্তার।

জানা গেছে, নানা অনিয়ম করে চেয়ারম্যান আবদুল করিম গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। কুমিল্লা সিটির ধর্মসাগরপাড়ে চেয়ারম্যান গলিতে কিনেছেন ৫ কাঠা জমি, যার বাজারমূল্য ৫ কোটি টাকা। আবদুল করিম প্রথমে গরু ও তেলের ব্যবসা করতেন। প্রথমে এলাকার মেম্বার। তার পর হন চেয়ারম্যান। এর পর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। রাতারাতি হয়ে উঠেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। তার বিলাসী জীবনযাপন ও চলাফেরায় অবাক এলাকার মানুষ। অর্ধকোটি টাকায় কিনেছেন লাল রঙের পাজারো গাড়ি। এলাকাবাসীর অভিযোগ এসব করেছেন অবৈধ টাকায়।

এই চেয়ারম্যানের হাত থেকে রেহাই পায়নি তার কার্যালয়ের সদস্য দুই ইউপি সদস্য ইয়াসমিন আক্তার ও রিংকু বেগম।

ইউপি সদস্য ইয়াসমিন আক্তার বলেন, চেয়ারম্যানের কাছে সাধারণ মানুষ জিম্মি তো সাধারণ কথা। আমরা নির্বাচিত ইউপি সদস্যই তার কাছে জিম্মি। চেয়ারম্যান অফিস কার্যালয়ে ঘরের বউয়ের মতো অশালীন ভাষায় গালাগাল করা হয়। শুধু তাই নয়, তিনজন সদস্যের ৩৭ মাসের বেতন আত্মসাৎ করেছেন চেয়ারম্যান।

আগের ইউএনও আমাকে দুই লাখ টাকা একটা কাজ দিয়েছিলেন সে টাকাও চেয়ারম্যান তুলে খেয়ে ফেলেছেন। আমি এ বিষয়ে স্থানীয় এমপি আবুল হাশেম খানের নিকট অভিযোগ দিয়েছি।

একই ইউনিয়নের ১,২ ও ৫ সংরক্ষিত আসনের নারী ইউপি সদস্য রিংক আক্তার যুগান্তরকে বলেন, আমার ৩৭ মাসের বেতন খেয়ে ফেলেছে এই আবদুল করিম চেয়ারম্যান। আমরা বিচার কার কাছে দেব? লজ্জা লাগে, আমাদের জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আমাদের এ চেয়ারম্যান অফিসে ঘরের স্ত্রী মতো গালাগাল করে। এগুলো বাইরে বলতে খারাপ লাগে। শুধু ইউএনকে জানিয়েছি।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে— সচিব মারজানা আক্তার সপ্তাহে ২-৩ দিন ইউনিয়ন পরিষদে বসেন। তিনিও নানা অনিয়মে জড়িত। ।

ইউএনওর কাছে অভিযোগকারী বাকশীমূল ইউপি সদস্য রিংকু মেম্বার বলেন, জন্ম নিবন্ধন করাতে সরকারি ফি ৫০ টাকা। সচিব আদায় করছেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। কোনো মানুষ টাকা দিতে না পারলে তার কাজ ফেলে রাখা হয়।

এসব অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চেয়ারম্যান আবদুল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
সচিব মারজানার আক্তারের সঙ্গে ০১৮……৭৭ নম্বরে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে কথা বলতে রাজি হননি। প্রতিনিধিকে সরাসরি দেখা করার অফার করেন সচিব।

এ বিষয়ে ইউএনও সাহিদা আক্তার যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি প্রথমে সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছি। পরে ইউপি সদস্য ইয়াসমিন আক্তারের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেনেছি। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + 17 =

Back to top button