জাতীয়

নৌকার মনোনয়ন পেলো রাজাকার পরিবারের সন্তান, মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষোভ

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ‘রাজাকার পরিবারের’ দুই সন্তান যশোরের বাঘারপাড়া ও মণিরামপুরে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক-নৌকা পেয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় দলের স্থানীয় নেতাকর্মীসহ মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, রাজাকার পরিবারের সন্তানরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হবে—এটি জাতির জন্য কলঙ্কের।

সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষণা করা হয়। এতে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে বিল্লাল হোসেন এবং মণিরামপুরের চালুয়াহাটি ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পান আবুল ইসলাম।

অভিযোগ উঠেছে, বিল্লাল স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতাকারী তৎকালীন শান্তি কমিটির স্থানীয় সভাপতি মোহাম্মদ আলীর ছেলে। স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তে স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতাকারীর ছেলে নৌকার প্রার্থী হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। শনিবার বিকালে (২৩ অক্টোবর) বাঘারপাড়ার রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে তারা ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন এবং শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রায়পুর বাজার প্রদক্ষিণ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা হাসান আলী বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডে রায়পুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বিল্লাল হোসেন। উনার বাবা কুখ্যাত রাজাকার মোহাম্মদ আলী। তার বড়ভাই শাহাদত হোসেনও রাজাকার ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘রাজাকার পরিবারের কেউ জনপ্রতিনিধি হলে তা জাতির জন্যে কলঙ্কের। এ কারণে আমরা চাই, বিল্লালের মনোনয়ন বাতিল করে নতুন কাউকে দেওয়া হোক।’

অপরদিকে, মণিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী করা হয়েছে উপজেলার আটঘরা গ্রামের দিনু রাজাকারের ছেলে আবুল ইসলামকে। তার মনোনয়ন বাতিল দাবিতে ইতোমধ্যে ইউনিয়ন কমিটির নেতৃবৃন্দসহ মুক্তিযোদ্ধারা দলের হাই কমান্ডে দরখাস্ত পাঠিয়েছেন।

জানতে চাইলে চালুয়াহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক, জেলা পরিষদের সদস্য শহীদুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘আবুল ইসলামের বাবা দিনু রাজাকার পাকিস্তান আর্মিদের খাবার রান্নাসহ তাদের অন্যান্য মালামাল সরবরাহ করতেন। আমরা তার মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়েছি।’

জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন বলেন, ‘দিনু রাজাকার ছিলেন—এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য আমার কাছে নেই। আমাকে কেউ অভিযোগও করেনি।’

এদিকে, যশোরে দুই রাজাকারের ছেলে নৌকা প্রতীক পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরগরম হয়েছে। তাদের মনোনয়ন বাতিলেরও দাবি জানানো হয়েছে সেখানে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তাছাড়া মনোনয়ন সংক্রান্তে আমাদের কোনও হাতও নেই। এটি কেন্দ্রের ব্যাপার।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − three =

Back to top button