ধর্ম ও জীবন

পবিত্র জুমার দিনের আমল ও ফজিলত

সাত দিনের মধ্যে জুমাবার তথা শুক্রবারকে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করা হয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুসলিম সমাজে জুমার দিনটিকে পৃথিবীর অন্যতম তাৎপর্যবহ দিবস হিসেবে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করেছেন। জুমা নামে পবিত্র কুরআনে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাজিল হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর ও আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ কর; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সূরা জুমুআ, আয়াত : ১০)

ফলে এই দিনে মুসলমানরা তাঁদের শত ব্যস্ততা ছেড়ে জুমার নামাজ আদায় করেন। নামাজের সময় গরিব-ধনীর ভেদাভেদ ভুলে সবাই এক কাতারে শামিল হন এবং মসজিদে প্রবেশের পর সবার মর্যাদা সমান। কোনো ব্যক্তি নিজেকে মর্যাদাবান মনে করে অন্য কোনো ব্যক্তির জায়গায় বসা মোটেই সমীচীন নয়। এ ব্যাপারে সহিহ বুখারির প্রথম খণ্ডের ৫১২ নম্বর হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে।

হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, ‘নবী করিম (সা.) নিষেধ করেছেন, কেউ যেন তার মুসলমান ভাইকে তার স্থান হতে উঠাইয়া দিয়া নিজে সেই স্থানে না বসে। তা জুমার দিন হোক বা অন্য কোনো দিন এবং মসজিদে হোক বা অন্য কোনো স্থানে হোক।’

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেছেন, এই দিনের মধ্যে এমন একটি মূল্যবান সময় আছে, যে সময়টুকুর মধ্যে নামাজরত অবস্থায় যেকোনো দোয়া করা হোক, আল্লাহতায়ালা উহা কবুল করে থাকেন, অবশ্য এই সময়টুকু খুবই অল্প। বুখারি প্রথম খণ্ড (৫২৩)। কাজেই জুমার দিনের প্রতিটি মুহূর্ত মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশেষ অর্থবহ। তাই আমরা আত্মশুদ্ধির লক্ষ্যে আল্লাহর স্মরণ অন্তরে জাগরূক রাখি।

অন্য আরেক বর্ণনায় রয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জুমার দিন যে ব্যক্তি গোসল করায় (অর্থাৎ সহবাস করে, ফলে স্ত্রী ফরজ গোসল করে এবং) নিজেও ফরজ গোসল করে, পূর্বাহ্ণে মসজিদে আগমন করে এবং নিজেও প্রথম ভাগে মসজিদে গমন করে, পায়ে হেঁটে মসজিদে যায় (অর্থাৎ কোনো কিছুতে আরোহণ করে নয়), ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কোন কিছু নিয়ে খেল তামাশা করে না; সে ব্যাক্তির প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন ও সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য সওয়াব।’ (মুসনাদে আহমাদ : ৬৯৫৪)

জুমার দিনে হাদিসে বর্ণিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমলের কথা বলা হয়েছে:

গোসল করা। ফজরের ফরজ নামাজে সূরা সাজদা ও সূরা দাহর/ইনসান তিলাওয়াত করা। উত্তম পোশা পরা। সুগন্ধি ব্যবহার করা। আগে ভাগে মসজিদে যাওয়া। সূরা কাহফ তেলাওয়াত করা।মসজিদে গিয়ে কমপক্ষে দুই রাকাত সুন্নত আদায় করা।

ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসা। মনযোগ দিয়ে খুৎবা শোনা। খুৎবা চলাকালে কোনো কথা না বলা। দুই খুৎবার মাঝের সময়ে বেশি বেশি দুয়া করা। অন্য সময়ে দুয়া করা। কারণ এদিন দু’আ কবুল হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সারাদিন যথাসম্ভব বেশি দরূদ পাঠ করা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 + six =

Back to top button