Lead Newsকরোনাভাইরাসনগরজীবন

পানিতে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষা করবে ওয়াসা

ঢাকা ওয়াসার পানিতে করোনার অস্তিত্ব রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। রোগীদের বর্জ্য থেকে ভাইরাস পানিতে মিশে সংক্রমণ ছড়ায় কিনা তা দেখার জন্যই মূলত এ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, পানিতে করোনাভাইরাস থাকতে পারে। তবে কতক্ষণ বেঁচে থাকে, সংক্রমণ ক্ষমতা কেমন, সংক্রমিত হয় কিনা এসব গবেষণা করে দেখা উচিত। রোগীর বর্জ্য সরাসরি তারা স্যুয়ারেজে না ফেলারও পরামর্শ দিয়েছেন।

ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পানিতে করোনাভাইরাসের অস্তিত্বের কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, পানিতে করোনাভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে। আক্রান্ত রোগীদের ব্যবহৃত পানি ও বর্জ্য থেকে পানিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনাভাইরাস।

বুধবার (২৪ জুন) বিকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গবেষণা হয়েছে এবং কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের ব্যবহৃত পানি ও মলে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তাদের হাঁচি ও কাশিতেও রয়েছে এই ভাইরাস। রোগীদের বর্জ্য সরাসরি স্যুয়ারেজে যাচ্ছে। এসব বর্জ্য বিভিন্নভাবে নদীতে গিয়ে মিশছে। তবে স্যুয়ারেজের পানিতে এই ভাইরাস কতক্ষণ বেঁচে থাকে অথবা ভালো পানিতে কতক্ষণ বেঁচে থাকে, এরকম কোনও গবেষণা আমাদের দেশে হয়নি। কারণ, আমাদের সেই মানের ল্যাব নেই। এটা দেখা দরকার।’

এই অধ্যাপক বলেন, ‘পানিতে করোনাভাইরাস আছে কিনা তা দেখা দরকার। কারণ, নদীর পানি মানুষ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে। শোধনাগারে শোধন হয়ে ঢাকায়ও আসছে এই পানি। এই পানিতে যদি ভাইরাসের অস্তিত্ব থাকে তাহলে বিপদ।’

তিনি বলেন, ‘রোগীর ব্যবহৃত পানি ও মলে যেহেতু ভাইরাসের অস্তিত্ব রয়েছে, তাই কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে হবে। সরাসরি স্যুয়ারেজে লাইনে রোগীদের বর্জ্য ফেলা যাবে না। তাদের বর্জ্য ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে অপসারণের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে তার আগে পানিতে এই ভাইরাসের আয়ুষ্কাল ও পানির মাধ্যমে সংক্রমণের গতি দেখতে হবে।’

দেশের এই বিশেষজ্ঞ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠানের গবেষকরাও পানিতে ও আক্রান্ত রোগীদের বর্জ্যে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, ‘আমরা যতদূর জানি পানযোগ্য পরিশোধিত পানিতে কোভিড-১৯ রয়েছে এমন কিছু আমরা এখনও পাইনি। তবে আমরা চেষ্টা করছি আমাদের পানিতে আছে কিনা তা পরীক্ষা করার। আমাদের নিজস্ব ল্যাব অথবা অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে ঢাকা ওয়াসার পানি পরীক্ষা করে দেখবো।’

ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর) এর অন্যতম উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘আক্রান্ত রোগীদের ব্যবহৃত পানির মাধ্যমে পানিতে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে। তবে বাতাসে ও পানিতে এই ভাইরাসের শক্তি তুলনামূলক কম থাকে। পানিতে থাকা ভাইরাস বেশি ভয়ানক নয়। এবিষয়ে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক কোনও গবেষণাও নেই। তবে পানি অবশ্যই বিশুদ্ধ করে ব্যবহার করতে হবে।’

সুত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − fifteen =

Back to top button