ভাইরাল

পানি আনতে ৩০ বছর ধরে একা খাল কাটলেন ভুঁইয়া

পাহাড়ি বৃষ্টির পানি গ্রামে চাষের জমিতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একাই দিনরাত খেটে তিন কিলোমিটার লম্বা একটি খাল কেটেছেন লউঙ্গি ভুঁইয়া। টানা ৩০ বছর ধরে খাল কেটে গিয়েছেন তিনি।

গল্প নয়, সত্যি। ভারতের বিহারের গয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় আনন্দবাজার।

ভুঁইয়া বলেন, ‘কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। রোজ ভোরে ঘুম থেকে উঠে খাল কাটতে যেতাম জঙ্গলে, একা হাতে।’

গয়ায় লাথুয়ার কোথিলাওয়া গ্রামের এই বাসিন্দা বলেন, ‘খাল কেটে পাহাড়ি বৃষ্টির পানিকে গ্রামের একটি পুকুরে মেশাতে ৩০টি বছর পার হয়ে গেছে আমার জীবনের।’

তিনি বলেন, ‘এতগুলো বছর ধরে রোজ ভোরে ঘুম থেকে উঠে যেতাম গরু-বাছুর চরাতে আর খাল কাটতে। একাই কাটতাম।’

‘রোজই খাল কাটতাম একটু একটু করে। একটু বেলা হলেই রোদে গা পুড়ে যেত গরমে। তখন আর পারতাম না। আবার কাজ শুরু করতাম পরদিন ভোরে’ যোগ করেন ভুঁইয়া।

তিনি বলেন, ‘গ্রামের সবাই সকালে ঘুম থেকে উঠে টাকা জন্য ছুটতেন শহরে। গ্রামের ক্ষেতে যে পানি পৌঁছয় না, সে দিকে হুঁশ ছিল না কারও। কিন্তু আমি গ্রাম ছেড়ে নড়িনি কোথাও।’

গয়া শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে কোথিলাওয়া গ্রামের চার পাশে ঘন জঙ্গল আর পাহাড়। গ্রামের বাসিন্দাদের জীবিকা বলতে চাষাবাদ আর পশুপালন। কিন্তু পানির কষ্টে চাষাবাদে খুবই অসুবিধা হতো।

গ্রামেরই বাসিন্দা পাত্তি মাঞ্জি বলেন, ‘কাজটা খুব সহজ ছিল না। একা হাতে খাল কেটেছেন লউঙ্গি কাকা। ৩০টি বছর ধরে। এতে ক্ষেতেখামারে জলসেচের সুবিধা তো হবেই, গ্রামের গরু-বাছুরগুলিও পানি পাবে।’

গ্রামের স্কুলের শিক্ষক রামবিলাস সিংহ ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘গ্রামের বহু মানুষ এতে উপকৃত হবেন। ওর (লউঙ্গি) এই কাজের জন্যই এখন গোটা গ্রাম ওকে সালাম ঠুকছে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × five =

Back to top button