মাসুদ আলম, রংপুর থেকেঃ বৃহত্তর উত্তরাঞ্চল, তথা তৎকালীন বরেন্দ্রভূমি ছিলো প্রাচীন কাল থেকেই ছিলো ইতিহাস ও ঐতিহ্যের লীলাভূমি। তার প্রমাণ আমরা ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব পর্যালোচনা করলে পাই। পাল বংশের শাসনামলে এই ভূমি শিক্ষা ও সভ্যতার জন্য বিশেষ গুরুত্ব লাভ করে। পাহাড়পুরে বৌদ্ধবিহার তো পাল সাম্রাজ্যের রাজধানীও ছিলো।
সেখান থেকে আমরা অনেক অজানা ইতিহাস জানতে পেরেছি এবং আজও ভূগর্ভস্থ অনেক অজানা তথ্য আমরা ধীরে ধীরে জানতে পারছি।
তারই ধারাবাহিকতায় এবার উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের ঝোপপুর গ্রামে সন্ধান মিলেছে আরেকটি প্রাচীন বৌদ্ধবিহারের। এটি প্রায় দেড় একর জায়গাজুড়ে মাটির ঢিবির মতো পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিলো।
গত ফেব্রুয়ারী মাসে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন(ইউজিসি) এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অর্থায়নে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একদল গবেষক এর খননকাজ শুরু করে। এর নেতৃত্বে ছিলেন একই বিভাগের প্রফেসর সোহাগ আলী।
বৌদ্ধবিহারটির নির্মাণকাল ধরা হচ্ছে আনুমানিক পঞ্চম থেকে সপ্তম শতাব্দী সময়কাল। এ পর্যন্ত খনন করে বিহারটি থেকে মৃৎপাত্র, বিভিন্ন ধরনের মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ, পাথরের টুকরো, টিসি বল ও প্রাচীন হাড়ের মতো প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে। বর্গাকার এই বৌদ্ধবিহারে নয়টি বৌদ্ধভিক্ষ্যু কক্ষ, কেন্দ্রীয় উপাসনালয় ও বাহির অঙ্গনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
গবেষক দলের নেতৃত্বে থাকা প্রোফেসর সোহাগ আলী জানান, “বৌদ্ধবিহারের নিদর্শনগুলো এখানে পাওয়া গেছে। খননকাজ সম্পন্ন হলে ” রেডিও কার্বন ডেটিং” এর মাধ্যমে প্রকৃত নির্মাণকাল নির্ণয় করা সম্ভব”।
সিরাজগঞ্জ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাস্টেডিয়ান আবু সাঈদ ইনাম বলেন, “নিদর্শনটিকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে”।
উক্ত গবেষক দলে ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ (বেরোবির) মোট দশজন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। মহাস্থানগড়ের থেকে দশজন এবং স্থানীয় শ্রমিক মিলে মোট বিশজন এই খনন কাজে যুক্ত ছিলো।