ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্যের জবানবন্দি
সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদ নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। সোমবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হিসেবে তারা এ জবানবন্দি দেন।
আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করে নিজ জিম্মায় যেতে দেন। যে তিনজন পুলিশ সদস্য জবানবন্দি দেন তারা হলেন- বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল দেলোয়ার হোসেন, সাইদুর রহমান ও শামীম আহমদ।
ঘটনার সময় ওই তিন পুলিশ সদস্য ফাঁড়িতেই ছিলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে হাজির করেন।
পরে তারা স্বেচ্ছায় ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন। বিকেল পৌনে ৫টায় জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তারা আদালত থেকে নিজ নিজ কর্মস্থলে চলে যান।
সিলেট মহানগর পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য ভূষণ চৌধুরী তিন পুলিশ সদস্যের সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে তারা আদালতে কী বলেছেন এবং কারও নাম বলেছেন কি-না এ ব্যাপারে কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে রায়হানকে তুলে নিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানাধীন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। সকালে তিনি মারা যান। নির্যাতন করার সময় তৌহিদ মিয়া নামে এক পুলিশ সদস্যের মুঠোফোন থেকে রায়হানের পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে টাকা চাওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা সকালে ফাঁড়ি থেকে হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের মরদেহ শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় ১১ অক্টোবর রাত আড়াইটার দিকে রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে পুলিশ সদস্যরা নির্যাতন করে তার স্বামীকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ এনে মামলা করেন।
রায়হানের মৃত্যুর জন্য দায়িত্বহীনতার দায়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে তাদের পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
এর মধ্যে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া গত মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) সকালে পুলিশ লাইন্স থেকে পালিয়ে যান। তাকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। বাকি ছয়জন পুলিশ লাইন্সে বলে জানা গেছে।