ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী অবস্থান চীনের
যুক্তরাষ্ট্রের কারণেই দীর্ঘ কয়েক দশকে ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংকট নিরসন হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে চীন। একইসঙ্গে ফিলিস্তিন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে বলে জানিয়েছে দেশটি।
রোববার অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এসব অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা তাদের দায় নিক, একটি স্পষ্ট অবস্থান নিক। এ সংকট সমাধানে নিরাপত্তা পরিষদের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মহল যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার সঙ্গে কাজ করুক যুক্তরাষ্ট্র।
ফিলিস্তিনে ইসরাইলের অব্যাহত হামলা নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে দুটি রুদ্ধদার বৈঠকের পর গতকাল এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হল। নিরাপত্তা পরিষদের এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছে চীন।
ইসরাইল ও ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রকাশ্য বিবৃতি চাইছে বেশ কয়েকটি দেশ। কিন্তু এতে বারবার বাধা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে বিবৃতি ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়ছে।
এ প্রসঙ্গে চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ সংকট সমাধানে একটি বিবৃতি দিতে অন্য দেশগুলোকে রাজি করাতে আবারও চেষ্টা চালাবে চীন।
বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, এ সংঘাত থামাতে যুক্তরাষ্ট্র তার কূটনৈতিক চ্যানেলগুলো ব্যবহার করে নিরলস কাজ করছে। আমরা বিশ্বাস করি, ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলিদের পূর্ণ অধিকার রয়েছে নিরাপদে বসবাসের।
বৈঠকে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালকি বলেন, প্রতিবারই ইসরাইল একজন বিদেশি নেতাকে ডেকে তাদের পক্ষে কথা বলায়। এর মধ্যে দিয়ে ফিলিস্তিনি হত্যার বিষয়ে আরও উৎসাহ পায় ইসরাইল।
উল্লেখ্য, চলমান ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট বাইডেন টেলিফোনে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে বলেছেন, তিনি ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন দিয়ে যাবেন। হামাস ও অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রকেট হামলা ঠেকাতে নিজেকে রক্ষা করার অধিকার রয়েছে ইসরাইলের।
অন্যদিকে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে গাজা থেকে রকেট হামলা বন্ধ করতে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে টেলিফোনযোগে বলেন বাইডেন।
বাইডেনের এই ফোনের পরই গাজায় হামলা আরো জোরদার করে ইসরাইল। যে কারণে বাইডেফোনের ফোনে ফিলিস্তিনে হামলা উসকে দেওয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ওয়াং ই বলেন, ‘ওই অঞ্চলে যে সংকট চলছে তা দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে অনেক আগেই তা সমাধান করতে পারত নিরাপত্তা পরিষদ। দুঃখজনক হলেও সত্য, তা এখনও করা যায়নি, আর এর প্রধান কারণ— যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সেজন্য ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে কোনো শান্তি চুক্তিতে বার বার ব্যর্থ হয় নিরাপত্তা পরিষদ। আমরা মনে করছি সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই নিরাপত্তা পরিষদের এ বিষয়ে উদ্যোগী হওয়া উচিত।’