Lead Newsজাতীয়

বরিশাল পুলিশের এএসপি আনিসুল হত্যায় জড়িত ১০ জন গ্রেপ্তার

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনার পর তার মৃত্যুকে ‘হত্যা’ বলছে পুলিশ।

তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেছেন, এএসপি আনিসকে মারধরের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। এই ঘটনার সঙ্গে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ, ব্যবস্থাপনার জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, ‘গত সোমবার (৯ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ৩১তম বিসিএসের পলিশ ক্যাডারের সদস্য মাে. আনিসুল করিমকে চিকিৎসা করানাের জন্য তার পরিবাবের সদস্যরা আদাবর থানাধীন বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটির ২ নম্বর সড়কের ২৮১ নম্বর বাড়িতে অবস্থিত Mind Aid Psychiatry & De Addiction Hospinal ঢাকায় নিয়ে যায়। হাসপাতালে যাওয়ার পর তিনি হাসপাতালের একটি রুমে নাস্তা করেন। কিছুক্ষণ পর তিনি ওয়াশরুমে যেতে চাইলে ১১টা ৩৫ মিনিটের দিকে হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয় তাকে ওয়াশরুমে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে হাসপাতালের দোতলায় নিয়ে যান। তখন তার বােন উম্মে সালমা তার সঙ্গে যেতে চাইলে আরিফ মাহমুদ জয় ও রেদোয়ান সাব্বির তাকে বাধা দেন এবং কলাপসিবল গেট আটকে দেন।’

‘আনুমানিক ১২টার দিকে আসামি আরিফ মাহমুদ জয় নিচে এসে তার বােনকে ওপরে যাওয়ার জন্য ডাক দেন। তার বােনসহ পরিবারের লােকজন ওপরে গিয়ে আনিসুল করিমকে একটি রুমের ফ্লোরে নিস্তেজ অবস্থায় শােয়া দেখতে পান। পরে পরিবারের সদস্যরা একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে দ্রুত জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা করে আনিসুল করিমকে দুপুর ১২টা ৫৮ মিনিটে মৃত ঘােষণা করেন। এই ঘটনায় আনিসুল করিমের বাবা বাদী হয়ে আদাবর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।’

ডিসি হারুন বলেন, ‘হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজ পর্যালােচনায় দেখা যায়, বেলা আনুমানিক ১১টা ৪৫ মিনিটে আসামিরা আনিসুল করিমকে হাসপাতালের দোতলার একটি রুমে মারতে মারতে ঢুকায়। তাকে রুমের ফ্লোরে জোরপূর্বক উপুড় করে ৩-৪ জন হাঁটু দিয়ে পিঠের ওপর চেপে বসে। কয়েকজন পিঠমােড়া করে ওড়না দিয়ে তার দুই হাত বাঁধে। কয়েকজন কনুই দিয়ে ঘাড়ের পেছনে ও মাথায় আঘাত করে।’

‘একজন মাথার ওপরে চেপে বসে এবং আসামিরা সকলে মিলে পিঠ, ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি মারে। ফলে আনিসুল করিম নিস্তেজ হয়ে পড়েন। পরিকল্পিতভাবে মারপিট করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

ঘটনা জানার পর থেকেই আদাবর থানা পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ঘটনাটি তদন্ত শুরু করে বলে জানান ডিসি হারুন। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনায় মারধরে জড়িত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতরা পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।

পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তা হত্যায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন, সবাইকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − 9 =

Back to top button