কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহিমের মধ্যে কে কার উপরে যাবে তা নিয়ে একটা লড়াই চলছিল; রানের দিক থেকে টেস্ট ও ওয়ানডেতে শীর্ষ ব্যাটসম্যানের জায়গাটা কার, সব সংস্করণ মিলিয়েই-বা সবার ওপরে কে! সব সংস্করণ মিলিয়ে রানের হিসাবে বাকি দুজনকে ছাপিয়ে এখন সবার ওপরে আছেন তামিম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনে আজ আরও একটা জায়গায় শীর্ষে উঠেছেন তামিম। তা অবশ্য যৌথভাবে, মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে।
তামিম আজ যে শীর্ষস্থানটাতে মাশরাফির সঙ্গে ভাগ বসিয়েছেন, সেটা না হলেই খুশি হতেন! শূন্যের রেকর্ডে নিজের নামটাকে শীর্ষস্থানে কেই-বা দেখতে চায়? ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে মাত্র ৪ বল খেলেছেন তামিম। স্পিনার রাকিম কর্নওয়ালের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফিরেছেন শূন্য রানে। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি—তিন সংস্করণ মিলিয়ে এটা ছিল তাঁর ৩৩তম শূন্য রানে আউট হওয়ার ঘটনা।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে আর একজনই এতবার শূন্য রানে আউট হয়েছেন। তিনি অবশ্য ব্যাটসম্যান নন, বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক ও পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে মাশরাফি ৩৩ বার শূন্য রানে আউট হয়েছেন ২৬২ ইনিংস খেলে। আর তামিম খেলেছেন ৩৯৯ ইনিংস। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে শূন্যের লড়াইয়ে ওপরের দিকে বেশির ভাগই নিখাদ ব্যাটসম্যান। মাশরাফি ও তামিমের পর আছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। তিনি ৩১০ ইনিংসে ৩১ বার শূন্য রানে আউট হন।
মুশফিকুর রহিম ৪১৫ ইনিংস খেলে শূন্য রানে আউট হয়েছেন ২৬ বার। তাঁর পরেই আছেন সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন। তিনি ২৫ বার শূন্য রানে আউট হয়েছেন তিনি, ২০৪ ইনিংস খেলে। এদিক দিয়ে সাকিব আল হাসানের অবস্থা বেশ ভালোই বলতে হবে। ৩৭৯ ইনিংস খেলে তিনি শূন্য রানে আউট হয়েছেন মাত্র ১৯ বার। হাবিবুল ও সাকিবের মধ্যে আছেন মোহাম্মদ রফিক, রুবেল হোসেন, মাহমুদউল্লাহ ও খালেদ মাসুদ।
হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবির্ভূত হন তামিম । আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর অভিষেকের পর থেকে শূন্য রানে আউট হওয়ার দিক থেকে সবার শীর্ষে স্টুয়ার্ট ব্রড। ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলার সব সংস্করণ মিলিয়ে গত ১৪ বছরে ৩০০ ইনিংসের মধ্যে ৪৫ বার কোনো রান না করেই আউট হয়েছেন। এই তালিকায় যৌথভাবে চতুর্থ স্থানে আছেন তামিম। ৩৭ বার শূন্য রানে আউট হয়ে এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ভারতের পেসার ইশান্ত শর্মা। তৃতীয় স্থানে আছেন ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলার জেমস অ্যান্ডারসন (৩৪ বার)। ৩৩ বার শূন্য রানে আউট হয়ে তামিমের সঙ্গে চার নম্বরে আছেন শ্রীলঙ্কার ফাস্ট বোলার লাসিথ মালিঙ্গা।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব মিলিয়ে শূন্যের ‘মহারাজা’ মুত্তিয়া মুরালিধরন। শ্রীলঙ্কার সাবেক স্পিনার ক্যারিয়ারে ৫৯ বার কোনো রান করে আউট হয়েছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক ফাস্ট বোলার কোর্টনি ওয়ালশ আছেন দ্বিতীয় স্থানে। বাংলাদেশের সাবেক কোচ তাঁর ক্যারিয়ারে শূন্য রানে আউট হয়েছেন ৫৪ বার। এ তালিকায় তামিমের অবস্থান যৌথভাবে ৩৫তম স্থানে। মাশরাফি ছাড়াও এখানে তিনি সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন কিংবদন্তি ব্রায়ান লারাসহ মার্ক বাউচার, স্টিভেন ফ্লেমিং, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও জ্যাক ক্যালিসদের মতো মহাতারকাদের।
