বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু করল যুক্তরাষ্ট্র
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ত্যাগ করার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আনুষ্ঠানিকভাবে ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনছেন ট্রাম্প। মহামারি করোনায় বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতের অভিভাবক সংস্থাটির কার্যক্রমে অসন্তুষ্ট হয়ে এমন সিদ্ধান্ত কার্যকরের পথে হাঁটছেন ট্রাম্প।
গত মে মাসেই ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ডব্লিউএইচওর পথ আলাদা হতে যাচ্ছে। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য সংস্থা এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে মত দেয়। কিন্তু ট্রাম্প তাঁর সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্প জাতিসংঘকে নিশ্চিত করেছেন যে তাঁরা একটি আনুষ্ঠানিক উপায়ে ডব্লিউএইচও থেকে সরে আসতে চান এবং সেটা সম্পন্ন হতে এক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
২০১৯ সালে সংস্থাটিকে সর্বোচ্চ তহবিল সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর ডব্লিউএইচওর বার্ষিক বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ বা চারশ মিলিয়ন ডলার দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
গত মে মাসের শেষের দিকে ট্রাম্প অভিযোগ তোলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কার্যক্রমে ডব্লিউএইচও চীনের নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। জাতিসংঘের সংস্থাটিতে অর্থায়ন বন্ধ করে অন্যত্র তা ব্যয় করবেন ট্রাম্প। তবে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে বছরখানেক সময় লাগবে।
জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফানে ডুজারিক বিবিসিকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ইস্তফার আবেদন জানিয়েছে। ২০২১ সালের ৬ জুলাই থেকে এটি কার্যকর হবে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসেও বিষয়টি জানিয়েছেন ট্রাম্প। শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সিনেটর রবার্ট মেনেডেজ বলেছেন, মহামারির মাঝামাঝি সময়ে এমন সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্র একঘরে হয়ে যাবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিবিএস নিউজকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউএইচওকে বেশ কিছু সংস্কার আনার প্রস্তাব দিয়েছিল, সংস্থাটি সেসব কার্যকর করতে অস্বীকৃতি জানায়।
অন্যদিকে, নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পের ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন টুইটে জানিয়েছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে প্রথম দিনই ডব্লিউএইচওতে পুনরায় যোগ দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কী এবং এর অর্থের জোগান দেয় কারা
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সংস্থাটি জাতিসংঘের বৈশ্বিক গণস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে। এ সংস্থাটির ১৯৪টি সদস্য দেশ আছে। এর মূল লক্ষ্য বিশ্বে স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো, নিরাপদ রাখা এবং অসুস্থদের সেবা করা।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া, নানা ধরনের ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করা, জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় মাঠে থাকাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাজ। এর সদস্য দেশগুলো মূলত অর্থের জোগানদাতা। জনসংখ্যা ও ধনসম্পদ অনুযায়ী, দেশগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় অর্থ দেয়।