রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দু’পাশে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বসেছে কোরবানির পশুর হাট। এখনো হাটে ওঠা কোরবানির পশু টুকটাক বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা আসতে-যেতে পশুর দাম বোঝার চেষ্টা করছেন। দামে মিলে গেলে কেউ কেউ হাতছাড়া করতে চাইছেন না পছন্দের পশুটি।
গরু বিক্রেতা ও ব্যাপারীরা জানিয়েছেন, কোরবানির পশু মূলত বেচা-বিক্রি হবে ঈদের আগের দুই দিন অর্থাৎ বৃহস্পতি ও শুক্রবার।
ইতোমধ্যে গরু কিনেছেন এমন কেউ কেউ বলেছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় গরুর দাম এবার কিছুটা কম।
ফরিদপুরের ভাঙ্গার মালিগ্রাম থেকে এসেছেন আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘আমি ১৯টি গরু নিয়ে এসেছি এবার। গত বছর ২৬টি গরু এনে সবগুলোই বিক্রি করেছিলাম। আল্লাহ যদি তৌফিক দেয় এবারও আশা করি, গরুগুলো বিক্রি হবে।’
গরুগুলোর দাম এক লাখ থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার মধ্যে বলেও জানান আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ‘দু-একটি গরু বিক্রি হচ্ছে। মূল বেচা-বিক্রি হবে ঈদের আগের দুই দিন বৃহস্পতি ও শুক্রবার। আমরা সেই অপেক্ষায় আছি।’
রাস্তার পাশে মোটরসাইকেল রেখে গরুর দামদর দেখছিলেন শাহরিয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘গরুর দাম বোঝার চেষ্টা করছি। ব্যাপারিরা বেশি দাম চাইছেন বলে মনে হচ্ছে। আজ না মিললে বৃহস্পতিবার হয়তো যা হয় একটা কিনে ফেলব।’
চাঁদপুর থেকে গরু কিনতে এসেছেন মোহাম্মদ আরজু। তিনি দুটি গরু কিনেছেন-একটির দাম ৮২ হাজার, আরেকটির ৫৫ হাজার।
চাঁদপুর থেকে ঢাকায় এসে গরু কেনার কারণ জানতে চাইলে মোহাম্মদ আরজু বলেন, ‘সব সময় আমরা এমনই করি, গাড়ি দিয়ে গরু নিয়ে যাই। আমাদের ওখানকার (চাঁদপুর) তুলনায় ঢাকাতেই গরুর দাম কিছুটা কম পাওয়া যায়। এবার গরুর দাম অন্যান্যবারের তুলনায় কিছুটা কম মনে হচ্ছে। তবে ব্যাপারিরা দাম হাঁকছেন অনেক বেশি। আমার দামে মিলে গেল তাই নিয়ে নিলাম।’
গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশের এই হাটটি প্রতিবছরই নির্দিষ্ট গণ্ডি ছাড়িয়ে অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। মহাসড়কে সৃষ্টি হয় যানজট। আশপাশের রাস্তাঘাট প্রায় বন্ধ হয়ে যায় এই হাটের জন্য। হাট ঘুরে দেখা গেছে, শনির আখড়া ওভারপাসের দুই পাশে ওঠা-নামার স্থান ইতোমধ্যে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
বৃষ্টির সময় হওয়ায় পুরো হাটেই পলিথিনের সামিয়ানা টাঙিয়ে নিয়েছেন বিক্রেতারা। বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টির কারণে তারা খুবই বিপত্তিতে পড়ছেন।
হাটের মাইক থেকে বারবার ঘোষণা করা হচ্ছিল ১৫ বছরের নিচের কাউকে হাটে প্রবেশ না করার জন্য। মাস্ক ছাড়াও হাটে প্রবেশ না করার জন্য বলা হচ্ছিল। কিন্তু হাটের মধ্যে শিশুদের ঘুরতে দেখা গেছে। আর অনেকের মুখে ছিল না মাস্ক।
শনির আখড়া পশুর হাটের ইজারাদার মো. কামরুজ্জামান বুধবার সকালে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বেচাবিক্রি খুবই কম। বৃষ্টির কারণে অবস্থা খুবই খারাপ। আশা করছি, ঈদের আগের দুই দিন ভালো বেচা-বিক্রি হবে।’
তিনি বলেন, আমরা যথাসাধ্য নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে হাট সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করি।
হাটে চার হাজারের বেশি গরু উঠলেও ইতোমধ্যে ২৩৫টির মতো গরু বিক্রি হয়েছে। পশুর দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কিছুটা কম বলেও জানান এই ইজারাদার।