আন্তর্জাতিক

ভারত-চীন সংঘাতে মার্কিন সেনা পাঠানোর ইঙ্গিত

ভারত-চীন সংঘাতকে কেন্দ্র করে ক্রমশ যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এ অবস্থায় সেনা পাঠানোর ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চীনের আগ্রাসনে যুক্তরাষ্ট্র যে হাত-পা গুটিয়ে বসে নেই, তা মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব মাইক পম্পেওয়ের কথায়ই পরিষ্কার। চীনের মোকাবেলায় আসছে মার্কিন সেনা।

জানা গেছে, এই সংঘাতের মধ্যেই জাপান মিসাইলের মুখ চীনের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীও যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। ভারতীয় সেনাপ্রধান নিজে সংঘাতপূর্ণ এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এসেছেন।

বৃহস্পতিবার ব্রাসেলস ফোরামের ভার্চুয়াল সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের দাদাগিরির কারণেই ইউরোপ থেকে মার্কিন সেনার সংখ্যা কমানো হচ্ছে। ভারতীয় মিডিয়া জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মুখে ভারত-চীন সীমান্ত সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা বললেও, আমেরিকা চীনের বিরুদ্ধে তলে তলে যুদ্ধপ্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র জার্মানিতে সেনাসংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে কেন? এর জবাবে, পম্পেও বলেন, মার্কিন সেনা বেশিদিন এখানে থাকবে না। তাদের অন্যত্র সরানো হচ্ছে। লক্ষ্য যে চীন, তা স্পষ্ট করে দেন পম্পেও।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সমালোচনাও করেন। বলেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পদক্ষেপ শুধু ভারতের জন্য হুমকি নয়। ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইনও চীনের হুমকির মুখে। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের তত্‍‌পরতা নিয়েও ক্ষুব্ধ আমেরিকা।

পম্পেও বলেন, ‘আমাদের সময়ের এই চ্যালেঞ্জ’- এর মোকাবেলা করতেই মার্কিন সেনাদের জার্মানি থেকে সরিয়ে আনা হচ্ছে।

‘আগ্রাসী রাশিয়া’কে ঠেকাতেই পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে সেনা উপস্থিতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আমেরিকা। ৬২ হাজারের ওপর মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে ইউরোপে। ইউক্রেন সংকট নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ার পর ন্যাটোয় এটাই যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি সেনা উপস্থিতি।

চীনা হুমকির কথা বলতে গিয়ে, পম্পেও ভারতের সঙ্গে চীনের রক্তাক্ত সীমান্ত সংঘাত, বেইজিংয়ের দক্ষিণ চীন সমুদ্র কার্যকলাপ, চীনের অর্থনৈতিক নীতি প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির হুমকির কথা বলেছি— ভারতের পক্ষে হুমকি, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার জন্য হুমকি। ফিলিপাইনের জন্যও হুমকি। আমরা পিএলএ’র (চীনের পিপল’স লিবারেশন আর্মি) মোকাবেলার জন্য যথাযথভাবে মার্কিন সেনা নিয়োগ করব। আমরা মনে করি, এটা আমাদের সময়ের চ্যালেঞ্জ।

১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যায় চীনের সঙ্গে সংঘাতে এক অফিসারসহ ২০ ভারতীয় জওয়ান নিহত ও ৭০ জনেরও বেশি জওয়ান আহত হয়। এই সংঘাতকে কেন্দ্র করে দু-দেশের সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার মধ্যেই ব্যাপক যুদ্ধপ্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ভারতীয় ভূখণ্ডের কিছু অংশ দখল করে, সেখানে পাকা পরিকাঠামো গড়ে তুলেছে চীন।

সূত্র: এই সময় ও ভারতীয় মিডিয়া

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + 1 =

Back to top button