মহামারিতে মৃত্যুতে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ দশে
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে চক্রবৃদ্ধি হারে। মৃত্যুর দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের একটি বাংলাদেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, গেলো এক সপ্তাহে (৯ জুলাই পর্যন্ত হালনাগাদ) করোনায় সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বিশ্বে এমন দেশগুলোর মধ্যে ১০ম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
গতকাল রোববার করোনাভাইরাসের সংক্রমণে এক দিনে সর্বোচ্চসংখ্যক মৃত্যু ও রোগী শনাক্ত হয়েছে। গতকাল সারা দেশে করোনায় ২৩০ জনের মৃত্যু এবং ১১ হাজার ৮৭৪ জন নতুন রোগী শনাক্তের তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগে বাংলাদেশ এক দিনে এত মৃত্যু ও নতুন রোগী দেখেনি। গতকালের আগপর্যন্ত দেশে এক দিনে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের রেকর্ড ছিল ১১ হাজার ৬৫১ জন। আর সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল ২১২ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, মৃত্যুর দিক থেকে গত এক সপ্তাহে প্রথম অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল, দ্বিতীয় স্থানে ভারত। নতুন রোগী শনাক্তের দিক থেকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, যেভাবে নতুন রোগী বাড়ছে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ৭ থেকে ১০ দিন পর হাসপাতালে শয্যা খালি পাওয়া যাবে না। পরিস্থিতি করুণ হতে বাধ্য।
অবশ্য নতুন রোগী শনাক্তের রেকর্ড হলেও গত কয়েক দিনের তুলনায় সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় রোগী শনাক্তের হার কিছুটা কমেছে। নমুনা পরীক্ষাও অনেক বেড়েছে। এই সময়ে মোট ৪০ হাজার ১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়, যা এক দিনে সর্বোচ্চ। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ছিল ২৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। টানা পাঁচ দিন পর রোগী শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের নিচে নামল। গত পাঁচ দিনের মধ্যে চার দিনই রোগী শনাক্তের হার ৩১ শতাংশের বেশি ছিল।
জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সংক্রমণের গতি ধীর করতে সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধের প্রভাব চলতি সপ্তাহ থেকে দেখা যেতে পারে। এই সপ্তাহে রোগী শনাক্তের হার কমতে পারে। তবে মৃত্যু আরও সপ্তাহ দুয়েক বাড়তির দিকেই থাকবে।
গতকাল স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র রোবেদ আমিন বলেন, সারা দেশেই সংক্রমণ বেড়েছে। খুলনা, ঢাকা, চট্টগ্রামে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। শনাক্তের হার ৩১-৩২ শতাংশ। এভাবে চলতে থাকলে দৈনিক শনাক্ত ১৫ হাজারে পৌঁছাতে বেশি সময় লাগবে না। যে হারে রোগী বাড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যে হাসপাতালে শয্যা, আইসিইউ খালি থাকবে না। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। কিন্তু অনেককে জরুরি প্রয়োজন ছাড়াও বাইরে বের হতে দেখা যাচ্ছে।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ১ জুলাই থেকে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। তবে দিন দিন বাইরে মানুষের যাতায়াত বাড়ছে। ২১ জুলাই পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকেন্দ্রিক যাতায়াত, কোরবানির পশুর হাটে লোকসমাগম বাড়লে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা আছে।