‘মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অনেক সময় অমানুষে পরিণত হয়। আমরা দেখি, কারো মায়ের একটু সর্দি, কাশি, জ্বর হলো দেখেই ছেলে, ছেলের বউ বা ছেলেমেয়ে এমনকি তাঁর স্বামী গিয়ে জঙ্গলে ফেলে আসে। এর থেকে অমানবিক কাজ আর হতে পারে না।’
আজ বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এমন ধরনের ঘটনা কেন ঘটবে? এমন অনেক কাহিনী আমরা শুনি, কিন্তু এত অমানবিক হওয়ার যৌক্তিকতা নেই। কাউকে যদি সন্দেহ হয়, তাহলে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন, তাঁর পরীক্ষা করান। নিজেরাও সুরক্ষিত হন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বা আইইডিসিআর থেকে নির্দেশনাগুলো মেনে চলুন। কিন্তু একটা মানুষকে বের করে দিবেন, বা একজন ডাক্তার অসুস্থ হলো তাঁকেও এলাকা থেকে বের করে দিতে হবে! এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটবে বাংলাদেশে।’
‘বাংলাদেশের মানুষের তো এ রকম অমানবিক হওয়ার কথা না। তাও এ বিষয়গুলো সবার দৃষ্টিতে আমরা আনতে চাই। হায়াৎ-মউত আল্লাহর হাতে, যেকোনো মানুষ যেকোনো দিন মরতে পারেন। আজকে আমি এখানে কথা বলছি, বসেও মরতে পারি, আবার যে কেউ মরতে পারেন। এটা কেউ বলতে পারে না, এক্ষুনি আমি বেঁচে থাকব। এটা একমাত্র আল্লাহ বলতে পারেন। এভাবে যে ভাইরাস দেখা দিল, এই ভাইরাস যে সারা বিশ্বকে ঘরবন্দি করে ফেলবে; এটা কি কেউ ভেবেছে?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বের অনেক শক্তিশালী দেশ, তাদের শক্তির দাপটে পৃথিবী অস্থির। আবার শক্তিশালী এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের সংঘাত ও অস্ত্রের মহড়া দেখেছি। এই অস্ত্র, সম্পদ এই অর্থ কোনো কাজে লাগে নাই, কোনো কাজে লাগবে না। এটাই প্রমাণ করে দিল এই করোনাভাইরাস। কাজেই সবাইকে সুরক্ষিত ও সাবধানে থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কিন্তু তার মানে এই নয় যে, অমানবিক আচরণ করতে হবে, এটা আপনারা করবেন না। আপনারা সবাই সুস্থ থাকেন সেটা আমরা চাই। এ রোগটা যেন আর ছড়াতে না পারে, তার জন্য যা যা করণীয় তা তা করতে হবে।’