Lead Newsআইন ও বিচার

মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র বিক্রিতে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা

মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রগুলো বিক্রি করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কী পরিমাণ অস্ত্র রয়েছে ও কী অবস্থা রয়েছে আগামী ছয় মাসের মধ্যে তা প্রতিবেদন আকারে জানাতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের অস্ত্র সংরক্ষণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। স্বরাষ্ট্রসচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থসচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব এবং বাণিজ্যসচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, আইনজীবী শাহীনুজ্জামান, সৈয়দা নাসরিন ও লাবনী আক্তার।

মহান মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে গত ১৫ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না এবং মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। ‘মুক্তিযুদ্ধের অস্ত্র বেচতে চায় সরকার’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এ রিটটি দায়ের করা হয়।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত হয়েছে- এমন আগ্নেয়াস্ত্রগুলো সরকার বেচে দিতে চায়। সরকারের যুক্তি হচ্ছে এগুলো পুরোনো, অপ্রচলিত এবং যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে অকার্যকর। ফলে রাখার কোনো দরকার নেই। প্রাচীন নিদর্শন বা স্মৃতিচিহ্ন (অ্যান্টিক স্যুভেনির) হিসেবে অস্ত্রগুলো কিনে নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ও সুইজারল্যান্ডের একটি অস্ত্র আমদানিকারক কোম্পানি।

এদিকে পুরোনোর পাশাপাশি নতুন অস্ত্র ও গোলাবারুদ রপ্তানিরও উদ্যোগ রয়েছে সরকারের। প্রথম উদ্যোগটি নেওয়া হয় ১৬ বছর আগে। এ বিষয় নিয়ে আবারও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

রপ্তানি করতে চাওয়া পুরোনো অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্যে তৈরি ০.৩০৩ রাইফেল নম্বর-৪ এমকে-১; ৯ এমএম স্টেন এসএমজি এমকে-২ ও সিএম ৯ এমএম স্টেন এ১; ভারতে তৈরি ৭.৬২ এমএম এসটিআর এল১ এ১ /১ এ ১ ও রাইফেল জি-৩; পাকিস্তানে তৈরি ৪৪ এমএম হ্যান্ড লঞ্চার এম-৫৭; যুক্তরাষ্ট্র/রাশিয়া/জাপানে তৈরি পিস্তল ও রিভলবার ৭০০ এবং জার্মানি/যুক্তরাজ্য/ভারতে তৈরি এলএমজি এইচকে ১১ এ১ সিএএল ৭.৬২ * ৫১।

আট শ্রেণি মিলিয়ে অস্ত্রের মোট সংখ্যা ২৭ হাজার ৬৬২। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪ হাজার ৪৫৪টি হচ্ছে ০.৩০৩ রাইফেল নম্বর-৪ এমকে-১। আর সবচেয়ে কম ১১৫টি হচ্ছে ৪৪ এমএম হ্যান্ড লঞ্চার এম-৫৭।

বিদ্যমান রপ্তানি নীতি ২০১৮-২১ অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে নতুন, পুরোনো বা অচল—কোনো ধরনের অস্ত্র রপ্তানিরই সুযোগ নেই। পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সব সময় ‘অস্ত্র ছাড়া সবকিছু’ (এভরিথিং বাট আর্মস) নীতি অনুসরণ করে আসছে।

তার পরও এগুলো রপ্তানির একটি পথ বের করার চেষ্টা চলছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা (বিওএফ) ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মিলে এ নিয়ে কাজ করছে কয়েক বছর ধরেই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 3 =

Back to top button